গত বছরের চেয়ে কম স্টল নিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের বইমেলা
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। দীর্ঘ নাটকীয়তা শেষে আর মাত্র চার দিন পর আগামী ১৮ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বইমেলা।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, এবারের বইমেলায় ৫২২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। যেখানে গত বছর স্টল সংখ্যা ছিল ৫৩৮টি। এ ছাড়া এক হাজার ৮১৭টি ইউনিট এবং ৩৩টি প্যাভিলিয়ন থাকবে এবারের বইমেলায়।
এবারের একুশে বইমেলার আয়োজন হবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখেই এবারের আয়োজন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এবারের বইমেলা সাজবে ‘হে স্বাধীনতা’ থিমে। একুশের চেতনাকে ধারণ করে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিব জন্মশতবর্ষ—সবকিছুই উঠে আসবে এই মেলায়।
মেলা শুরু হবে ১৮ মার্চ এবং শেষ হবে ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ বরণের মধ্য দিয়ে।
অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষের আকাঙ্ক্ষা, বৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়তে পারে এবারের বই মেলার আয়োজন। বৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা বিবেচনায় রেখে এবারের মেলায় আগতদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থাও থাকবে। তা ছাড়া করোনা মহামারির বিষয়টি মাথায় রেখে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত পুরোদমে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। সেজন্য একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দোয়েল চত্বর থেকে শাহবাগ। এসব বাস্তবতার মধ্যেই হবে এবারের মেলা। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় স্টল কিংবা প্যাভিলিয়ন নির্মাণের ক্ষেত্রেও বিবেচনায় থাকবে দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি।
প্রতিবছর বইমেলায় বিক্রয়কর্মী থেকে শুরু করে পাঠক-শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশগ্রহণ থাকে। কিন্তু, করোনার মহামারির কারণে এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনও বন্ধ রয়েছে। মার্চের শেষ দিকে স্কুল কলেজ খুললেও বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
এবারের মেলায় অনেক পাঠকের সমাবেশ হবে বলে আশাবাদী প্রকাশকেরা। তাঁরা বলছেন, যেখানে এবছর বইমেলা হওয়ারই কোনো কথা ছিল না, সেখানে বইমেলা হচ্ছে এটাই বড় কথা। শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ পাঠক-শ্রেণি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে প্রথম দিকে পাঠকের আনাগোনা একটু কম হলেও যেহেতু ৩০ তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে, এরপর থেকেই মেলা জমে উঠবে।
সার্বিক বিষয়ে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঢাকায় চলে এসেছেন। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্র-শিক্ষক-প্রকাশক নির্বিশেষে সব শ্রেণির পাঠকের সন্নিবেশে একটা ভালো মেলাই হবে বলে আশা রাখছি।