‘গোলাম সামদানী কোরায়শী ছিলেন মুক্তমনের প্রাজ্ঞপুরুষ’
খ্যাতিমান লেখক ও গবেষক অধ্যাপক গোলাম সামদানী কোরায়শীর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি গতকাল সোমবার বিকেলে একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে তাঁর জীবন ও সৃষ্টি নিয়ে আলোচনার আয়োজন করে।
বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, আয়োজনে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও অধ্যাপক বদিউর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গোলাম সামদানী কোরায়শীর পুত্র কবি ইয়াজদানী কোরায়শী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
স্বাগত ভাষণে নূরুন্নাহার খানম বলেন, গোলাম সামদানী কোরায়শী একজন বিস্মৃতপ্রায় বঙ্গীয় মনীষী। তাঁকে স্মরণ মানে আমাদের ইতিহাসের প্রগতিবাদী ধারাকে শক্তিশালী করা।
আলোচককেরা বলেন, গোলাম সামদানী কোরায়শী ছিলেন মুক্তমনের প্রাজ্ঞপুরুষ। ধর্মীয় শিক্ষা তাঁকে ধর্মের উদার মর্ম আস্বাদন এবং সুমানবিক জীবন গঠনে প্রণোদনা জুগিয়েছে। তাঁরা বলেন, গোলাম সামদানী কোরায়শীর অবদান বহুমাত্রিক। তিনি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রকল্পে কাজ করেছেন, ময়মনসিংহ এবং জাতীয় স্তরে শিক্ষক আন্দোলন সংগঠনে ভূমিকা রেখেছেন। ছড়া, গল্প, নাটক, জীবনী, প্রবন্ধ, অনুবাদ এবং সম্পাদনাকর্মে সমান স্বাচ্ছন্দ্য গোলাম সামদানী কোরায়শীর বহুবিস্তারী মননের পরিচয়বহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেন, গোলাম সামদানী কোরায়শী বর্তমানে বহুলপঠিত নন, অনেকটা বিস্মৃত বলা চলে, কিন্তু বাংলাদেশের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন লেখক তিনি; তাঁকে নিয়ে এই আলোচনা সভা আয়োজন করার জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের স্বতন্ত্র ভাষা ও সাহিত্য নির্মাণে যে সকল লেখক বুদ্ধিজীবী কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাঁদের ঋণ আমরা কিছুটা হলেও শোধ করতে পারি তাঁদের লেখালেখি ও সৃষ্টিশীল কাজের চর্চার মধ্য দিয়ে। তাই গোলাম সামদানী কোরায়শীর মতো মনস্বী লেখকদের নিয়ত ও নিয়মিত চর্চা এবং পাঠের কোনও বিকল্প নেই।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কবি ইয়াজদানী কোরায়শী বলেন, গোলাম সামদানী কোরায়শীকে জাতীয় পরিসরে স্মরণ করে বাংলা একাডেমি একটি গুরুদায়িত্ব পালন করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, গোলাম সামদানী কোরায়শী একজন রেনেসাঁ-মানব। তাঁর বহুমাত্রিক সৃজনকর্মের মধ্যে ছোটদের বঙ্গবন্ধু এবং দুই খণ্ডে অনূদিত আল মুকাদ্দিমা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া তাঁর অসামান্য আত্মজীবনী সিন্ধুর এক বিন্দু একটি কালের ইতিহাস ধারণ করেছে।