চারু মজুমদার রচনাসমগ্র প্রকাশ করছে ঐতিহ্য
বাংলাদেশে রচনাবলি প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য। ঐতিহ্য প্রকাশিত রচনাবলির মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৩০ খণ্ড), বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১০ খণ্ড), মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১০ খণ্ড), জীবনানন্দ দাশ (৬ খণ্ড), শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (৫ খণ্ড), প্রমথ চৌধুরী (৭ খণ্ড), ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (৪ খণ্ড), আল মাহমুদ (১৩ খণ্ড), রশীদ করীম (৫ খণ্ড) রচনাবলি এবং সর্বশেষ সৈয়দ শামসুল হক (৩৫ খণ্ড) রচনাসমগ্র। এবার একটু ব্যতিক্রমধর্মী রচনাবলিতে হাত দিচ্ছে ঐতিহ্য।
মনজুরুল হকের সম্পাদনায় অমর বিপ্লবী চারু মজুমদারের নানাবিধ রচনা দিয়ে ৪ খণ্ডে ‘চারু মজুমদার রচনাসমগ্র’ প্রকাশ করছে ঐতিহ্য।
উপমহাদেশের সর্বহারা শ্রেণির বিপ্লব-বিদ্রোহে এক আলোকবর্তিকার নাম কমরেড চারু মজুমদার। তাঁর হাত ধরেই শুরু হয়েছিলো ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি কৃষক অভ্যুত্থান। বিপ্লবের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কমরেড চারু মজুমদার নকশালবাড়ি কৃষক অভ্যুত্থান বা ‘বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ’ ঘোষণা করেছিলেন।
দীপ্ত কণ্ঠে তিনি বলেছিলেন—‘বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতে জানতে হয়। যে স্বপ্ন দেখে না সে বিপ্লবী হতে পারে না।’ ‘বিপ্লবী হতে হলে নিজের সঙ্গে অনেক লড়াই করতে হয়।’ ‘যখন চারিদিকে হতাশা, তখন ভাবতে হবে—আই অ্যাম দ্য অল্টারনেটিভ, আমিই পার্টি গড়ে তুলব।’ ‘জনগণকে জাগিয়ে তোলার জন্য তোমাদের শক্তিকে ভাগ করে দাও, শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য তোমাদের শক্তিকে একত্র জড়ো করো। জনগণের কাছ থেকে শেখ। জনগণই প্রকৃত শিক্ষক।’
হাজার বছরের নিপীড়িত ভারতবর্ষের কৃষক চারু মজুমদারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নকশালবাড়ির রক্তস্নাত পাঠকের ভূমি দখল করে এই প্রথম স্বাধীনতার অর্থ খুঁজে পায়। সেই প্রথম তারা হাজার বছরের অত্যাচার নির্যাতনের দাঁতভাঙা জবাব দিতে শেখে। নকশালবাড়ি অভ্যুত্থান শুধু যে ভারতবর্ষের কৃষকশ্রেণিকে উজ্জীবিত করে তাই নয়, এ যাবৎকালের ঘুণে ধরা জমিদারি-ফৌজদারি শিল্প-সংস্কৃতিকে ছুঁড়ে ফেলে শিল্পসাহিত্য রচনা করে বদলে দেয় সামন্ত-সমাজের আগপাশতলা।
সম্প্রতি প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য’র প্রধান কার্যালয়ে ৪ খণ্ড ‘চারু মজুমদার রচনাসমগ্র’ প্রকাশনা চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং চারু মজুমদার রচনাসমগ্রের সম্পাদক মনজুরুল হক এবং ঐতিহ্যের প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাইম।
ঐতিহ্য আশা করছে, খুব শিগগিরই ৪ খণ্ড ‘চারু মজুমদার রচনাসমগ্র’ পাঠকের হাতে তুলে দিতে পারবে।