হুমায়ূন আহমেদের চলে যাওয়ার ১০ বছর
বাংলা সাহিত্যের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, খ্যাতিমান ও জনপ্রিয় কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগে ২০১২ সালের আজকের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। পরে তাঁকে নুহাশপল্লীতে সমাহিত করা হয়।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই খ্যাতি লাভ করেন তিনি।
বাংলাদেশে পাঠকপ্রিয় এ লেখক দুই শতাধিক ফিকশন ও নন-ফিকশন বই লিখেছেন। হিমু, মিসির আলির মতো চরিত্র দিয়ে লাখো-কোটি পাঠক-ভক্ত তৈরি করেছেন এই কথার জাদুকর। ১৯৯০ ও ২০০০-এর দশকে হুমায়ূন আহমেদের বইগুলো একুশে বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রি হতো।
হুমায়ূন আহমেদকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখকদের মধ্যে অন্যতম গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক।
বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ুন আহমেদকে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক দেওয়া হয়।
নব্বই দশকের শুরুতে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে হুমায়ূন আহমেদের। নিজের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে হুমায়ূনের পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ইত্যাদি। ‘আগুনের পরশমণি’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ও ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ চলচ্চিত্রের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।
মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় প্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করছেন তাঁর অগণিত ভক্ত।
নুহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ
হুমায়ূন আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের পিরুজালী এলাকায় অবস্থিত নুহাশপল্লীতে প্রতি বছরের মতো কোরআনখানি, মিলাদ, দোয়া ও এতিম শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।
হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওন তাঁর দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিতসহ ভক্তদের উপস্থিতিতে কবর জিয়ারত করেছেন।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানিয়েছেন, দিনটি উপলক্ষে সকাল থেকে কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল হয়। হুমায়ূন আহমেদের পরিবারসহ স্থানীয় মাদ্রাসার ছাত্র ও ইমামেরা এ দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।