পলান সরকার স্মরণে বই বিনিময় উৎসব
প্রতিনিয়ত আমরা একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছি নিজস্ব ব্যস্ততায়। এমনই এক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে “মেঘের ধাক্কা” আয়োজন করতে যাচ্ছে “ পলান সরকার স্মরণে বই বিনিময় উৎসব”।
আগামী ১৭ই নভেম্বর, শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শুরু হয়ে এই আয়োজন চলবে বেলা ১টা পর্যন্ত। সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে বাসা থেকে নতুন, পুরোনো যেকোনো ধরণের কিছু বই সঙ্গে আনতে। তারপর সেই বইগুলো অনুষ্ঠান স্থলে আসা অন্যদের সঙ্গে বিনিময় করতে।
এই আয়োজনটি শুধুমাত্র বই বিনিময় উৎসব হিসেবেই ভাবা হচ্ছে না। সবাই যেন একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হন, গল্প করেন, পারস্পারিক সুখ-দুঃখ, চিন্তা-ভাবনা ও ভাব বিনিময় করেন এমনটাই প্রত্যাশা। কেন না এই শহরের ভেতরে ভেতরে মানুষ বড় একা। আমরা চাই এই আয়োজনের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য বিনিময় এবং মুক্ত চিন্তার আদান প্রদান ঘটুক। অনুরোধ করা হয়চ্ছে সবাই যেন তাঁর শিশু সন্তান বা ছোট ভাইবোনদের সঙ্গে নিয়ে আসেন। তাহলে আগামী দিনের শিশুরা এখন থেকেই বইয়ের প্রতি, বই পড়ার প্রতি একটি বিশেষ উৎসাহ এবং আনন্দ খুঁজে পাবে। পাশাপাশি শিশুটির মাঝেও তৈরি হবে সামাজিক মূল্যবোধ, বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ এবং জ্ঞান অনুসন্ধানের তৃষ্ণা।
অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন সুধীজন, নাট্যশিল্পী, আবৃত্তি শিল্পীসহ অনেক গুণীজণকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন গান, আবৃত্তি পরিবেশনাও থাকবে।
‘মেঘের ধাক্কা’সর্বদা চেষ্টা করে কিছু সৃজনশীল, এবং সামাজিক শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের। গত বছর ২০২২ সাল থেকে এই অনুষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং ‘মেঘের ধাক্কা’প্রতি বছরই এই আয়োজনটি করতে বদ্ধপরিকর।
পলান সরকার ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি তাঁর জীবনের সমস্ত সহায় সম্বল বিকিয়ে দিয়ে নিজের জীবনটা শিক্ষার জন্য উৎসর্গ করেছেন। ৯০ বছর বয়সেও তিনি প্রতিদিন দশ-বারো কিলোমিটার পায়ে হেঁটে মানুষের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিয়েছেন।
আজ এই সময়ে যখন শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেওয়া হচ্ছে, ছাত্রের হাতে শিক্ষক খুন হচ্ছে, ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের ঘর বাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, তখন বুঝতে হবে আমাদের সমাজের পচন কোন মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাই এই সময়ে, এই দেশে একজন পলান সরকার খুবই জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। এবং তাঁকে উদ্দেশ্য করে নিবেদিত এই আয়োজন