মেলায় কাজ করে মেলাতেই খাই!
আর তিন দিন বাদেই শুরু হবে লেখক-পাঠক-প্রকাশকের প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। নতুন বইয়ের গন্ধে তাদের জন্য এই মেলা হয়ে উঠেবে মিলন মেলা। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে সুষ্ঠুভাবে মেলা আরম্ভে তাই পরিশ্রম করছেন স্টল-প্যাভিলিয়ন নির্মাণ শ্রমিকরা। আজ রোববার (২৮ জানুয়ারি) থেকে ব্যস্ত ইলেক্ট্রিশিয়ানও, সঙ্গে রঙের কারিগর। যেসব স্টলের অবকাঠামো ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে, তাতে চলছে সাজসজ্জার কাজ। আর ছাপা খানায় তো দম ফেলার সময় নেই। হরদম প্রিন্ট-বাইন্ডিংয়ে ব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা। মেলার মাঠ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কর্মরতরা বলছেন, এখন সেখানেই তাদের কাজ, সেখানেই খাবার—এভাবেই পার হচ্ছে তাদের সময়।
সময় তখন দুপুর ২টা। মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, একদল শ্রমিক কাজ করছেন, একদল বসে খাচ্ছেন। তাদের সবাই আবার একই সেক্টরের শ্রমিক, তা কিন্তু না। কেউ নির্মাণ, কেউ কাঠের, কেউ বিদ্যুতের, কেউ সজ্জার। সবাই যেন মিলেমিশে এখন এক পরিবার। একসঙ্গে খেতে বসে তেমনটাই এনটিভি অনলাইনকে জানালেন বিদ্যুতের শ্রমিক মো. খোরশেদ আলম। আলু ভর্তা, সবজি আর ডিমের তরকারিতে ভাত খেতে খেতে আরেক শ্রমিক মো. আব্দুর রহিম বললেন, অনেক কাজ পড়ে আছে, সময় আর মাত্র তিন দিন। কাজ শেষ করতে হবে। তা ছাড়া, কাজের শুরু থেকেই আমরা একসঙ্গে বসে খাই। মেলাতেই কাজ করি মেলাতেই খাই, এই আরকি।
প্যাভিলিয়নের কাজ কাজের ফাঁকে কয়েকজন মিলে খেতে বসেছিলেন সুজন। তখন সময় বেলা আড়াইটা। খেতে দেরি কেন জানতে চাইলে মিষ্টি হেসে বললেন, নির্দিষ্ট সময় নেই। দুপুর হলে কাজের ফাঁকে একসঙ্গে কয়েকজন বসে খাই। ভালো লাগে। হাতের কাজ একটু না গুছিয়ে তো খেতে বসতে পারি না। তাই দেরি হয়ে গেল।
খাওয়া শেষে ফের কাজে লেগে পড়বেন খোরশেদ, আব্দুর রহিম, সুজনের মতো হাজারও শ্রমিক। তাদের খাবার কোনো কোনো ঠিকাদার এসে দিচ্ছেন কাছের হোটেল থেকে। তাও বেশ দূরে বলে জানালেন তারা। আবার অনেকে খাচ্ছেন মাঠেই আয়োজিত মৌসুমী খাবারের ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থা থেকে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভের কাছে সেই খাবার পরিবেশন করছিলেন দুই নারী। তারা জানান, ৫০ টাকায় ডিম দিয়ে ভরপেট খেতে পারেন একজন। এ ছাড়া সেখানে আছে মুরগির মাংস, মাছের ব্যবস্থাও। এই মুরগি-মাছ দিয়ে খেতেও খরচ একেবারেই হাতের নাগালে। মাত্র ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক বাটি মাংস। মাছের দামও একই রাখছেন তারা।