খাঁ খাঁ করছে লিটলম্যাগ চত্বর, অনেক স্টলে নেই ব্যানারও
অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিনেও খাঁ খাঁ করছে লিটলম্যাগ চত্বর। বরাদ্দ পাওয়া দেড় শতাধিক স্টলের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটিতে মিলিছে নাম-পরিচিতি। অন্যগুলোতে টাঙানো হয়নি ব্যানার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন আজ শনিবারও (৩ ফেব্রুয়ারি) চত্বরটি ছিল প্রায় ফাঁকা। যদিও এটি বরাবারের বৈশিষ্ট্য বলে দাবি করেছেন লিটলম্যাগ সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দীর্ঘ সময় ঢাকাতে অবস্থানের জন্য গুছিয়ে আসতে হয় বলে প্রতিবারই মেলা শুরুর সপ্তাহখানেক পর জমতে শুরু করে লিটলম্যাগ চত্বর।
বাংলা একাডেমি একাডেমির লিটলম্যাগ ব্যবস্থাপনা উপকমিটির আহ্বায়ক ড. এ কে এম কুতুবুদ্দিন জানান, অমর একুশে বইমেলায় বরাদ্দকৃত লিটলম্যাগ লটারির তালিকা আগেই জানানো হয়েছে। তার স্বাক্ষরিত একটি ফর্দ বলছে বরাদ্দ পাওয়া স্টলগুলোর মধ্যে আছে করাতকল, দ্রষ্টব্য, তর্জনী, চর্যাপদ, টইটই, দেয়াঙ, কোরাস, খেয়া, দেশলাই, দোলন, দ্বীপজ, দশমিক, থাকবিরিম, জলধি, চারবাক, জমিন, আড্ডাপত্র, চিরহরিৎ, অতঃপর, অনশ্বর, অনুপ্রাণন অনুভূতি, ঘরামি, ঘুংঘুর, চন্দ্ৰবিন্দু, অনুরণন, চারনিক, অবিশ্রান্ত, অমরাবতী সাহিত্য পত্রিকা, চিহ্ন, অদ্রি, আর্শি, ছড়া আনন্দ ছোটদের সময়, কবিতার কম্পাস, ক্যাপটেন, নতুন এক মাত্রা, নিসর্গ। দেড়শতাধিক লিটলম্যাগের নাম ওই তালিকায় থাকলেও কয়েকটি বাদে অনেকগুলোই এখনও তাদের বরাদ্দের স্টলে টাঙাইনি তাদের পত্রিকার নাম। তবে, সম্পদকদের অনেকের মতে, আজ মাত্র তৃতীয় দিন। কয়েকদিন গড়ালেই জমে উঠবে এই চত্বর।
সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আজ ১০টির মতো স্টলে দেখা গেছে লিটলম্যাগ চত্বরে। সেখানে ‘যুক্তস্বর’-এর স্টলে থাকা বিক্রয়কর্মী জানান, তারা প্রথম দিন থেকেই আছেন। আরও কয়েকটি লিটলম্যাগের স্টলে লোক আছে। তবে, কী কারণে এখনও সবাই আসছে না, তা বলা কঠিন।
দোলন সম্পাদক কামাল মুস্তাফা জানান, শিশু-কিশোদের উপযোগী করে প্রকাশ হয় ‘দোলন’। ২০০৯ সালে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ‘দোলন’ মূলত উৎসবভিত্তিক কাজ করে আসছিল। লিটলম্যাগের স্টলে ছোট কাগজের কম উপস্থিতির বিষয়ে কামাল মুস্তাফা বলেন, নানা দিক সামলে ছোটকাগজ পাঠকের হাতে পৌঁছায়। এই ছোটকাগজ সম্পাদকরাও বিভিন্ন পেশায় জড়িত। তার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজ করে যাচ্ছেন তারা। অনেকে তাই সকালে পৌঁছাতে পারেন না। বিকেলের দিকে আসেন।
নতুন এক মাত্রার সম্পাদক কবি ড. ফজলুল হক তুহিন বলেন, প্রতিবারই লিটলম্যাগ চত্বর জমে উঠতে সপ্তাহখানের সময় লাগে। তাই এটি খুব একটা অসামঞ্জস্য মনে হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লিটলম্যাগ সম্পাদকরা ও সংশ্লিষ্টরা আসতে একটু সময় লাগে বলে এমনটা হয় বলে মনে করি। তবে, এবারের মেলায় স্থান নির্বাচনও অনেকটা প্রভাব বিস্তার করেছে বলে আমার মনে হয়েছে। সেটিও একটি কারণ হতে পারে।
করাতকলের নির্বাহী সম্পাদক কবি শাফি সমুদ্র একই কথা এনটিভি অনলাইনকে জানান। এ ছাড়া তিনি বলেন, গতবার মেলায় স্থান নির্বাচনটা বেশ ভালো হয়েছিল। খোলামেলা ছিল। আর এবার অনেকটা বস্তি বিশেষ করে তোলা হয়েছে। অনেক স্টলের সামনে গাছ পড়ে ব্লক হয়ে আছে। যদিও লিটলম্যাগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ককে জানালে তিনি কিছুটা সমাধান করেছেন। তা ছাড়া এবারের লিটলম্যাগ চত্বরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও স্থান দেওয়া হয়েছে। ছোটদের বই প্রকাশ করে এমন প্রকাশনীকেও স্থান দেওয়া হয়েছে এই চত্বরে। ফলে লিটলম্যাগের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক। ফলে লিটলম্যাগ সম্পাদকদের মধ্যে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর পেছনে বাংলা একাডেমির উদাসীনতাকে দায়ী করেন তিনি।