বইমেলার শিশুপ্রহর দুলছিল ফুলের মুকুট পরা শিশুতে
সকাল আজ ছিল অন্যরকম। ফাল্গুনের তৃতীয় দিনে শিশুচত্বরে আসা অধিকাংশ শিশু-কিশোরদের মাথায় ফুলের মুকুট আর পোশাকে ছিল বাসন্তি সাজ। তাদের সঙ্গে অভিভাবকরাও ছিলেন এমনই সাজে। হাসি-আনন্দে কেটেছে তাদের। কিনেছে বইও। অধিকাংশই ছুটেছে রূপকথার রাজ্যে। ভূতমামাদের পছন্দ তাদের। তবে, ‘ভূত-ভূত’ ‘ভূতুরে’ বিষয় থেকে শিশুকিশোরদের দূরে রাখতে প্রয়াস অভিভাবকদের। যদিও মেলায় যেভাবে মেলে রাখা হয়েছে এমন বই, তার থেকে দূরে নিতে পারা যাচ্ছে না শিশুদের—এমনটাই দাবি তাদের।
আজ সকালে অমর একুশে বইমেলার গেট খুলতেই ঢল নামে শিশুকিশোরদের। দৌড় আর দৌড়। সঙ্গে লাফ-ঝাপ। বইয়ের মেলায় শিশুরা যেন উড়ছিল প্রজাপতির ডানায়। হাসিখুশি আয়রা (৯)। মাথায় ফুলের মুকুট। সে জানায়, আগে খেলে নিই। তারপর বই কিনব। ভূত তার পছন্দ। বইমেলার শিশুপ্রহরে মেয়ের আনন্দে দুলছিলেন তার মা। গৃহিনী তিনি। জানান, সন্তানকে নিয়ে প্রতিবারই বইমেলায় আসেন তিনি। তবে, ‘ভূত-ভূত’ বইপড়া থেকে দূরে রাখতে চান শিশুকে। তবে, পারছেন না। টিভিতে, কার্টুনে তো আছেই। তার প্রভাব পড়ছে তারা মেয়ের ওপর। আবার বইমেলায় শিশুদের জন্য বইয়ের স্টলে যেভাবে ভূতুরে বই সাজিয়ে রাখা, মেয়ের চোখ পড়ছে। আর মেয়েকে সরাসরি নিষেধ করতে চান না তিনি। তাই কিনেও দিতে হয়েছে।
শুক্রবার ছুটির দিন বইমেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। শুরু থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। এর আগে সকাল ১০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে হয় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। নির্ধারিত নিয়মে শিশুপ্রহরের প্রধান আকর্ষণ সিসিমপুরের মঞ্চ ছিল আজ, থাকবে আগামীকালও। আজ হালুম, ইকরি, টুকটুকি, শিকুরাও ছিল মেলায়। এই মঞ্চে বিকেল সাড়ে ৩টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় থাকবে বরাবরের মতো নির্ধারিত প্রদর্শনী।
শিশুদের বই বিক্রি বেশ ভালোই চলছে। দ্বৈতা প্রকাশের স্বত্বাধিকারী ও লেখক সাইদ মাহমুদ জানান, শিশুরা বই কেনে। তাদের অভিভাবকরাও বেশ সচেতন। বয়স অনুযায়ী বাচ্চাদের বই কিনে দিচ্ছেন তারা। আঁকাঝোকার বইও বেশ চলছে। আর রূপকথা, অনুবাদ রূপকথা, ভূতবিষয়ক গল্প শিশুদের পছন্দের তালিকায় ওপরে। আর কিশোররা থ্রিলারও খুঁজছে। বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়েও তাদের প্রচুর ঝোঁক।
শিশুদের ছোটকাগজ দোলন সম্পাদক কামাল মোস্তফা বলেন, ‘সকালটা পুরো মেলায় দেখেছি শিশুদের বিচরণ। সব স্টলেই অভিভাবকের হাত ধরে শিশুরা ঘুরছে। বইও কিনছে।’