অধিক অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলেছেন। বিভিন্ন কারণে আগের নির্বাচন পুরো অংশগ্রহণমূলক হয়নি। সেজন্য আমরা চাই, নির্বাচনটা (দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন) যাতে আরও অধিক অংশগ্রহণমূলক হয়।’
আজ রোববার নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপের সূচনা বক্তব্যে সিইসি এ কথা বলেন। এ সংলাপে ৩০ শিক্ষাবিদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত হয়েছেন ১৩ জন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য দেশের বরেণ্য ৩০জন শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন—ড. জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসাইন, ওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, সাদেকা হালিম, ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, ড. আখতার হোসেন, লায়লুফার ইয়াসমিন, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. নিয়াজ আহম্মেদ খান।
যদিও এ বিষয়ে গতকাল শনিবার ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘মোট ৩০ জন শিক্ষাবিদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে হয়তো কেউ কেউ আসবেন না। তবে অনেকেই আসবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। কারও কারও আবার আমন্ত্রণপত্র পৌঁছানো হলেও মুঠোফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।’
গত বুধবার অর্থাৎ ৯ মার্চ নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন—শিক্ষাবিদ, বিশিষ্টজন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নারীনেত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবে ইসি। তাদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করার পরিকল্পনা ইসির।
ইসির জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২২ মার্চ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এবং ৩০ মার্চ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বসতে পারে ইসি। অন্য মহলের সঙ্গে কবে নাগাদ বসবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। পরদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা শপথ নিয়ে প্রথম অফিস করেন ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এককভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারে না। আমাদের কনসার্ন যে এজেন্সিগুলো আছে, সবাই চেষ্টা করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেটাকে আমরা বলি পলিটিক্যাল লিডারশিপ অব দ্য কান্ট্রি, এর মানে আওয়ামী লীগ একা নয়। দেশে বিএনপি, আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টি মিলে একটি পলিটিক্যাল লিডারশিপ থাকে। এ লিডারশিপে কিন্তু একটা সমঝোতার চেষ্টা করতে হবে। কেউ কারও সঙ্গে কথা বলব না, আমরা মাঠেই কথা বলব—তাহলে কিন্তু সমস্যা।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এরই মধ্যে আমাদের সংলাপের উদ্দেশ ব্যক্ত করা হয়েছে। এই কমিশন নবগঠিত কমিশন। কমিশনের কাজ হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও লোকাল গর্ভমেন্ট নির্বাচন সম্পন্ন করা।’
সিইসি বলেন, ‘সংলাপের মাধ্যমে প্রকৃত জনগণের মতামত ওঠে আসবে। সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে কী কী করণীয় সে বিষয়ে আপনাদের (শিক্ষাবিদ) মতামত নিয়ে আমরা অনেক কিছু আহরণ করতে পারবো, আরও ঋদ্ধ হবো।’
নির্বাচন কমিশন ২০১৭ সালে সবশেষ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল। সে বছর ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে কার্যত ওই সংলাপ শুরু হয়েছিল। এরপর ৪০টি রাজনৈতিক দল, নারী নেতৃত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যমের সঙ্গেও বসেছিল কে এম নূরুল হুদার কমিশন।
এবার কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৩ সালের শুরু থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করবে কমিশন।