অনলাইন জুয়া নিষেধ করায় স্কুলশিক্ষিকাকে হত্যা করে ভাতিজা
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকা রোকসানা খানম রুনা (৫২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আপন ভাইয়ের ছেলে নওরোজ কবির নিশাতের (১৯) হাতে রুনা খুন হয়েছেন বলে জানায় ডিবি পুলিশ।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে হত্যায় ব্যবহৃত শিল উদ্ধারের পর নিশাতকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশাত হত্যার কথা স্বীকার করেছে। অনলাইন বেটিং জুয়ায় বাধা দেওয়ায় নিশাত রোকসানাকে ঘুমের মধ্যে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। হত্যায় ব্যবহৃত শিলটি নিশাতের দেখিয়ে দেওয়া লিফটের পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল রোকসানা হত্যার ঘটনায় পরিবারের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এর মধ্যে ভাইয়ের ছোট ছেলে নিশাতের মোবাইল পরীক্ষা করে সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিশাত হত্যার কথা স্বীকার করে।’
ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নিশাতের বাবা মারা যাওয়ার পর ফুফু রোকসানাই তাকে প্রতিপালন করেছে। নিশাত অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। এ কারণে সে ফুফুর কাছ থেকে প্রায়ই টাকা নিত। ফুফুর কিনে দেওয়া মোটরসাইকেল বিক্রি করেও জুয়া খেলত নিশাত।’
নিশাতের বরাত দিয়ে ডিবির ওসি আরও বলেন, ‘জুয়া নিয়ে বকাবকি করায় নিশাত তার ফুফুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। রোববার সন্ধ্যায় রোকসানা বাড়ির ছাদে উঠলে, সেই সুযোগে কক্ষে ঢুকে আত্মগোপন করে নিশাত। ফুফু ঘুমিয়ে পড়লে রাত দেড়টার দিকে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর বাসার বারান্দার ওপরের ডিজাইন করা গোল ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে যায়।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খাঁন বলেন, ‘স্কুলশিক্ষিকা রোকসানা খানম হত্যার ঘটনায় তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে নওরোজ কবির নিশাতকে আসামি করে সোমবার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।’
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকা রোকসানা খানমের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয় নিজ বাসভবন থেকে। তাঁর স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান যশোরের চৌগাছা এলজিইডি কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি সেখানেই থাকেন।