অপরাধ ও অপপ্রচারের সঙ্গে সাংবাদিকতা মেলাবেন না : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজের অনুন্মোচিত বিষয় তুলে আনে, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। সাংবাদিকতা একটি মহৎ পেশা। অপরাধ ও অপপ্রচারের সঙ্গে সাংবাদিকতাকে মেলাবেন না।’
গতকাল শনিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ইফতার সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেপ্তার হওয়া প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে একটি ১০ বছরের ছেলেকে ১০ টাকা দিয়ে ফুঁসলিয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলানোর চেষ্টা এবং সে না বললেও তার বক্তব্য হিসেবে সেটি প্রচার করা, শুধু বাংলাদেশের সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী নয়, সারা বিশ্বে যে সাংবাদিকতার নিয়ম-নীতি রয়েছে, সেগুলোরও পরিপন্থী।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ লঙ্ঘিত হয়েছে এবং দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রতি কটাক্ষ করা হয়েছে। এসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলেই মামলা হয়েছে। এর সঙ্গে সাংবাদিকতাকে না মেলানোর অনুরোধ জানাই। তবে কারও কোনো হয়রানি যেন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে প্রায় প্রতিদিন দেশের পত্র-পত্রিকায় লেখা হয়, টেলিভিশনে রিপোর্ট প্রচার করা হয়—এ নিয়ে কোনো মামলা তো দূরের কথা, কোনোদিন কাউকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশ্নও করা হয়নি। অথচ এই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট পত্রিকা থেকে বিদেশি গণমাধ্যমে বলা হয়, দ্রব্যমূল্য নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে তাদের সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই বলে তাদেরকে উসকানি দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট এই অসত্য অপপ্রচার আসলে দেশবিরোধিতা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং সব সময় তা বজায় রাখতে চায়। কিন্তু গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আর অপরাধ এক জিনিস নয়। দেশের সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো, সম্পাদক, প্রকাশক, শিক্ষক, শিল্পী, সুশীল সমাজও স্বাধীনতাকে কটাক্ষের প্রতিবাদ জানিয়েছে, বিবৃতি দিয়েছে, কারণ এখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের আইন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হয়েছে। যুক্তরাজ্যে সাইবার সিকিউরিটি ল’জ অ্যান্ড রেগুলেশন ২০২২, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার ল’ অ্যান্ড পানিশমেন্ট এবং এ ধরনের আইন বিশ্বের বহু দেশে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের অপরাধের শাস্তি হচ্ছে ২০ বছর কারাদণ্ড। ডিজিটাল মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর কারণে যদি কারও মৃত্যু হয়, তবে সেই অপরাধের শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তারা আমাদের আইন নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার চেষ্টা করে, অথচ এ দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য বহু দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনেক বেশি কঠিন।’
সভায় ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল আহসান সোহেল শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি দীপু সারোয়ারসহ অন্যান্য সদস্যরা।