অবশেষে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন ফরিদপুরের বীরাঙ্গনা মায়া
মহান মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুরের শোভারামপুরে নিজ বাড়িতে ১৬ বছর বয়সে হানাদার বাহিনী ও স্থানীয় দোসরদের দ্বারা নির্যাতিত নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) মায়া রানী সাহা অবশেষে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন।
মায়া রানীর ছেলে উত্তম সাহা বলেন, ‘আমাদের প্রথম দিকে খুঁজে বের করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুল। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা পি কে সরকার মায়ের বক্তব্য নিয়ে লেখালেখি করেন। এর কিছুদিন পর ‘কালেরকণ্ঠ’ পত্রিকায় মায়ের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। কদিন আগে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান। যারা আমাদের এই মর্যাদা পেতে সাহায্য করেছেন আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।’
জানা গেছে, বীরাঙ্গনাকে নিয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে একটি প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তাঁকে স্বীকৃতিস্বরূপ নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) গেজেটভুক্ত করে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব রবীন্দ্রনাথ দত্ত স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাঁর নাম যুক্ত করা হয়।
স্বীকৃতির পরে বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা বীরাঙ্গনা মায়া রানী সাহাকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক তাঁর কার্যালয়ে গত ২১ ডিসেম্বর সম্মাননা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীরাঙ্গনা মায়া রানী সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা পি কে সরকার।
এছাড়া গতকাল বুধবার ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজসেবা কর্মকর্তা উপজেলা কার্যালয়ে তাঁকে ফুলেল সংবর্ধনা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ৬১ জন বীরাঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে একমাত্র মায়া রানী সাহা ফরিদপুরের একজন। তাঁর স্বীকৃতির বিষয়টি ছিল ফরিদপুরে মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রাখা প্রতিটি মানুষের প্রাণের দাবি। যা বাস্তবায়ন হওয়ায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে তাঁর ধন্যবাদ জানিয়েছেন।