অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সাজা খেটে ফেরত গেলেন ৫ ভারতীয়
পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই বাংলাদেশে প্রবেশের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা খেটে অবশেষে দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন নারীসহ পাঁচ ভারতীয়। দিনাজপুর ও নওগাঁ কারাগারে তারা দুই থেকে সাত বছর ধরে সাজা খাটেন।
হিলি অভিবাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, আজ বুধবার দুপুরে চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বাংলাদেশের হিলি অভিবাসন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদিউজ্জামান ভারতের হিলি অভিবাসন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপ্রা রায়ের কাছে এই পাঁচ জনকে হস্তান্তর করেন। এ সময় সেখানে পরিবারের লোকজনকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ফিরে যাওয়া ভারতীয়রা। এ ছাড়া হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা।
চেকপোস্টের নোম্যান্সল্যান্ডে নিজ দেশে ফেরার সময় কথা হয় সান্ত্বনা মুর্মুর (৪৮) সঙ্গে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘সামান্য ভুলের জন্য আমাকে পরিবার-পরিজন ছেড়ে জেলে থাকাটা কত যে কষ্টের, তা ভাষায় বোঝানো যাবে না। এই ভুল আর হবে না। বাংলাদেশে যদি কখনো আসি, পাসপোর্ট-ভিসা করে আসব। আমার মতো যেন কেউ আর এই ভুল না করে।’
ভারতে ফিরে যাওয়া নাগরিকেরা হলেন ভারতের বর্ধমান জেলার ভাতা থানার নরেন হাঁসদার ছেলে ছামিউল হাসদা (৩৮) ও একই থানার মন্টু মুর্মুর স্ত্রী সান্ত্বনা মুর্মু (৪৮), মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার একরাম মার্ডির ছেলে রুবেল মার্ডি (৪৩), দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার হোপনার ছেলে লিপলাল হেমব্রম (৪৪) এবং আসাম রাজ্যের ডরবি থানার শহিদুর রহমানের ছেলে নুর আমিন শেখ (৩৩)।
বাংলাদেশের হিলি অভিবাসন পুলিশের ওসি মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘এই পাঁচ ভারতীয় নাগরিক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় তাদের কাছে বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। এ কারণে বিজিবি তাদের আটক করে মামলা দেয়। সাজার মেয়াদ শেষ হলে দুই দেশের আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ বুধবার তাদের ভারতের অভিবাসন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
হাকিমপুর থানার ওসি মো. খায়রুল বাশার বলেন, ‘অনুপ্রবেশের অপরাধে তাদের ২ থেকে ৭ বছর মেয়াদে সাজা হয়। এরপর থেকে তারা দিনাজপুর ও নওগাঁ কারাগারে আটক ছিল।’
ভারতের হিলি অভিবাসন পুলিশের ওসি শিপ্রা রায় বলেন, ‘অবৈধভাবে গিয়ে তারা বাংলাদেশে আটক হয়। সেখানে সাজা খেটে তারা মুক্তি পেলে আজ আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা তাদের পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছি। বাংলাদেশে তারা সাজা খেটেছে, তাই ভারতে পানিশমেন্টের দরকার হয় না।’