অবৈধ সম্পদ অর্জন : সম্রাটকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে আগামী ২৫ অক্টোবর হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন। সম্রাট বর্তমানে কারাগারে আছেন।
হাজিরের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সম্রাটকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করায় অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানি হয়নি। এজন্য বিচারক ২৫ অক্টোবর তাকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করার নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এরপরে, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ ছাড়া যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে মামলায় দুই কোটি পাঁচ লাখ ৪০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরমানের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। একই দিন সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এনামুল হক আরমানকে মাদক আইনের মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছিলেন।
এর আগে ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাট। এরপরে ওই বছরের ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তাঁর সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সেদিন বিকেলে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তাঁর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, এক হাজার ১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে।
ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ায় সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেদিনই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেরানীগঞ্জের কারাগারে।
আর কুমিল্লায় অভিযানের সময় যুবলীগ নেতা আরমানকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়ায় সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান। তার কাছে ১৪০টি ইয়াবা পাওয়ায় চৌদ্দগ্রাম থানায় মাদক আইনে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে র্যাব।
আর ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে মাদক আইনের মামলায় সম্রাট ও আরমান দুজনকে এবং অস্ত্র মামলায় শুধু সম্রাটকে আসামি করা হয়।