অভিনেত্রী শিমুকে তাঁর ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয় : পুলিশ
চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে তাঁর নিজের ফ্ল্যাটেই হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। সূত্রটি বলছে, রাজধানীর কলাবাগানের গ্রিনরোডের বাসায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।
তদন্ত সংশিষ্ট সূত্রটি বলছে, শিমুকে হত্যার পর তাঁর স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল এবং নোবেলের বন্ধু ফরহাদ লাশটি গুম করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তারপর দুজনে মিলে দুটি বস্তা একসঙ্গে জোড়া লাগিয়ে ভেতরে লাশটি রাখেন। এরপর নোবেলের নিজের গাড়িতে করে শিমুর লাশটি নিয়ে কেরাণীগঞ্জের আলিয়াপুর ব্রিজ এলাকায় যান। সেখানে লাশটি ফেলে রেখে পালিয়ে আসেন তাঁরা।
শিমুর লাশটি গত সোমবার দুপুরের দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি শনাক্ত করে ওইদিনই শিমুর স্বামী নোবেল ও ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁরা দুজনই এ হত্যাকাণ্ড ও লাশ গুমের ব্যাপারে দায় স্বীকার করেন। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার একটি হত্যা মামলা করেন শিমুর বড় ভাই হারুন অর রশিদ। এ মামলায় শিমুর স্বামী নোবেল, তার বন্ধু ফরহাদ ও আরও একজনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরাণীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চুন্নু মিয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা জেনেছি—সাখাওয়াত আলী নোবেল শিমুকে নিজের বাসাতেই হত্যা করেন। গ্রিন রোডের যে বাসায় তাঁরা থাকতেন, ওই বাসাটি নোবেল ও তাঁর ভাইয়ের। ওখানে হত্যা করে তারপর লাশটি গুম করে দেওয়ার জন্য কেরাণীগঞ্জে নিয়ে আসা হয়।’
শিমুর মেজ ভাই শহিদুল ইসলাম খোকন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে নোবেল-শিমু তাদের গ্রিনরোডের বাসায় থাকত। যে ফ্ল্যাটে থাকত, ওই ফ্ল্যাটটি শিমুর নামে লেখা। আমরা থাকি অন্য স্থানে। নোবেল ও তার বন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে নোবেলে সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। ঘটনা জানতে চেয়েছিলাম। পরে থানায় বসে আমরা নোবেলের সঙ্গে কথা বলি। সে সময় নোবেল আমাদের কাছে মাফ চেয়ে বলেছে, তিনি একাই এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। কেন হত্যা করেছে, তা তিনি বলেনি।’
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘শিমুকে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন তাঁর স্বামী নোবেল। আমরা জানতে পেরেছি, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জন্য এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া আর কোনো কারণ আছে কি না, বিস্তারিত তদন্তে আমরা স্পষ্টভাবে জানতে পারব।’
তবে, শহিদুল ইসলাম খোকন এ দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘কী পারিবারিক কলহ থাকবে, যার জন্য বোনকে মেরেই ফেলবে? আমরা তো কখনও এমন কিছু দেখিনি বা শুনিনি। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে।’