অর্থ আত্মসাত : পিপলস লিজিংয়ের পরিচালক ও দুই মেয়ের জামিন
অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় গ্রেপ্তার পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিনের দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার দুপুরে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শর্তের মধ্যে রয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে পিপলস লিজিংয়ের পরিচালনা বোর্ডের কাছে ১০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। এ ছাড়া দুই বোনসহ তাদের পরিবারের মোট ১১ জনের পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিলে তারা র্যাবের হেফাজত থেকে মুক্তি পাবেন।
জানা যায়, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন নিজে ও তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে প্রায় দুইশ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এরমধ্যে তার দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ৬৪ কোটি। পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৮ জুলাই দেশে আসেন তারা। আজ বুধবার ভোরে দুজনকে রাজধানীর ধানমণ্ডি ও শ্যামলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ঋণখেলাপিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ১৯ এপ্রিল তাদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেন।
দুই বোনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী। কর্মরত থাকাকালে নিজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থআত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার দুজন তাদের বাবা সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিনের মাধ্যমে ঋণ নেয়। শারমিন ৩১ কোটি ও তানিয়া ৩৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তারা গত ২৮ জুলাই কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং আজ পুনরায় গোপনে কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করছিল।
১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তী সময়ে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে।