আইপিটিভি-ইউটিউবে সংবাদ প্রচার করা হলে ব্যবস্থা : তথ্যমন্ত্রী
আইপিটিভি ও ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রচার করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সচিবালয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্সের (অ্যাটকো) প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার এক বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
এর আগে অ্যাটকোর পক্ষ থেকে উপরিল্লিখিত মাধ্যমে সংবাদ প্রচার বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, যেসব পত্রিকা অনলাইন হিসেবে নিবন্ধন নিয়েছে, তাদের ইউটিউব যুক্ত করে নিউজ ও টকশো করার অনুমোদন নেই।
হাছান মাহমুদ আরও জানান, সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাস করে, কিন্তু এর সুযোগ নিয়ে কেউ বেআইনি কাজ করতে পারে না। টিআরপি নিয়ে একটা জটিলতা রয়েছে জানিয়ে, সেটি ঠিক করা হবে বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে—জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া এবং অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা। একটি গণতান্ত্রিক সমাজের, একটি বহুমাত্রিক সমাজের সেটি পূর্বশর্ত। সেটি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পত্রিকা যেন টেলিভিশনের আঙিনা ইনভেড না করে, আবার টেলিভিশন যেন পত্রিকার আঙিনা ইনভেড না করে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আর আইপিটিভি বা ইউটিউব চ্যানেলের নামে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সংবাদ প্রচার করলে সেটিও আইন বর্হিভূত। আমি আশা করব, এ কাজগুলো হবে না। আমরা এ ব্যাপারে কার্যকর ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
অন্যদিকে, অপর অনুষ্ঠানে আইপিটিভি ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা নীতিমালা বিরোধী উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) এ বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে কেউ যাতে গুজব ছড়াতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ডিসি সম্মলনে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশনে এ নির্দেশনা দেন তথ্যমন্ত্রী। অধিবেশন শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো আইপিটিভি বা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে কেউ সংবাদ পরিবেশন করতে পারে না। কিন্তু আইপিটিভির মাধ্যমে এখনও কোনো কোনো জায়গায় সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে। সেখানে নিয়মিত সংবাদ বুলেটিন পরিবেশন করা হয়। ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমেও সংবাদ বুলেটিন প্রচার করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকেরা হচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের প্রাণ। জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমেই সরকারি সিদ্ধান্তগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। এজন্য জেলা প্রশাসক সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রায় নয় কোটি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। সেটি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়া যেমন প্রচারের বড় ক্ষেত্র, তেমনি অপপ্রচার বা গুজব রটানোরও ক্ষেত্র। গত সাত থেকে আট বছরের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে, দেশে যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে, গুজব রটেছে, রটানো হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। এর সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে করানো হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা প্রশাসকদের কাছে আমরা সেই বিষয়টি তুলে ধরেছি। অনেক সময় দেখা যায়, বিভ্রান্তিমূলক নানা খবর ছড়ানো হয়। সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা হয়। সে বিষয়গুলো ডিসিদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। তাঁরা যেন এসব বিষয়ে তৎপর থাকেন এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেন।’