আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন আজ
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন আজ শনিবার। করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবারের সম্মেলন অনেকটাই সাদামাটাভাবে আয়োজন করেছে দলটি। তবে সম্মেলন যতই সাদামাটা হোক না কেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিবারের মতোই এবারের সম্মেলনেও থাকছে আওয়ামী লীগের ব্যতিক্রমী প্রত্যয় বা স্লোগান। তৈরি হয়েছে থিম সং। এবারের সম্মেলনের প্রত্যয় ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। এই বিষয়কে সামনে রেখেই সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসবেন। পরে আধা ঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। পরে শোক প্রাস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে।
২২তম জাতীয় সম্মেলনে সারা দেশ থেকে প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর এবং লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেবে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে গিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময়ই একটি স্মার্ট দল। আওয়ামী লীগই সব সময় প্রথমে ভাবে জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে কী করতে হবে। আওয়ামী লীগের হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশও আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হবে।’
জাতীয় সম্মেলনকে সফল করতে ১১টি উপকমিটি কাজ করছে। প্রথা অনুযায়ী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ও সদস্য সচিব সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের এই কর্মযজ্ঞ সফল করতে রাতদিন পরিশ্রম করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। দফায় দফায় বৈঠক, দাওয়াতপত্র বিতরণ, গঠনতন্ত্র সংযোজন, বিয়োজন, ঘোষণাপত্র পরিমার্জন, মঞ্চ সাজসজ্জাসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ পর্যায়ে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এবারের সম্মেলন সাদামাটা হলেও নেতাকর্মী কমবে না। সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ঢল নামবে। দেশের মানুষ কষ্টে আছে ভেবেই এবার সম্মেলনে সাজসজ্জা করা হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন। দেশের মানুষের কথা ভেবেই এবারের সম্মেলন সাদামাটাভাবে করা হচ্ছে।’
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর উপর নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৪ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ। মূল মঞ্চের উচ্চতা ৭ ফুট। সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা মঞ্চ। মূলমঞ্চে চার লেয়ারে চেয়ার সাজানো হয়েছে। প্রথমে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসবেন। দ্বিতীয়টিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জ্যেষ্ঠ নেতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাকি দুটোতে কেন্দ্রীয় নেতারা বসবেন। মূলমঞ্চে মোট ১২০টি চেয়ার রাখা হয়েছে।’
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে খরচ কমাতে সম্মেলনে সাদামাটা আয়োজনের জন্য এ বছর বিদেশিদের দাওয়াত করা হচ্ছে না। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত করেছে আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের বেশির ভাগই দুই দিনব্যাপী হয়েছে। এবার তা এক দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে।’
জানা গেছে, ২০১৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সর্বশেষ সম্মেলনের বাজেট ছিল তিন কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এবারের সম্মেলনের জন্য বাজেট তিন কোটি ১৩ লাখ টাকা অনুমোদন করেছে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি।