আগ্নেয়াস্ত্রসহ ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য আটক
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূল সমন্বয়কসহ পাঁচ সদস্যকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় র্যাবের মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সমম্মেলনে আজ শনিবার এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সে বিষয়ে নজরদারি করছে র্যাব।
গ্রেপ্তার হয়েছেন—ছিনতাই চক্রের মূল সমন্বয়ক মো. আজিম উদ্দিন (৩৮), মো. রফিক উল্লাহ (২৬), মো. সেলিম (৫০), মো. কামরুল হাসান (২৬) ও ওমর ফারুক (২৫)। অভিযানে তিনটি পিকআপসহ একটি সিএনজি, একটি পিস্তল, একটি গুলি, তিনটি ছোরা, একটি চায়নিজ কুড়াল, ছয়টি মুঠোফোন এবং ১২ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ যানবাহন বা গাড়ি ছিনতাই বা চুরি চক্রের সদস্য। এই সংঘবদ্ধ চক্রের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন জড়িত। এই চক্রের মূল হোতা ও সমন্বয়ক আজিম উদ্দিন। পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এই চক্রটি সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রের সদস্যেরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এরই মধ্যে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই বা চুরি করেছে বলে জানিয়েছে। এ পর্যন্ত চক্রটি গাড়ি ছিনতাইয়ের মাধ্যমে কোটি টাকার বেশি কারবার করেছে।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা সাধারণত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটসহ নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের আশপাশের এলাকায় পিকআপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই বা চুরি করে থাকেন। তাঁরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করে থাকেন। প্রথম দলের সদস্যেরা বিভিন্ন ছদ্মবেশে গাড়ি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। মূলত গাড়ি পার্কিং, গতিবিধি, চালক ও মালিক সম্পর্কে আগেই তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর দ্বিতীয় দল মূল হোতা বা মূল সমন্বয়কের নির্দেশনা অনুয়ায়ী মাঠ পর্যায় থেকে গাড়ি ছিনতাই বা চুরি করে থাকে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, তৃতীয় দল ছিনতাই বা চোরাই গাড়ি হাতে পাওয়ার পর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে রাখে। তারপর ভুক্তভোগী চালকের মোবাইল থেকে মূল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা দাবি করে থাকে। চতুর্থ দল নির্দিষ্ট কয়েক দিন ছিনতাই হওয়া গাড়ি লুকিয়ে রাখার পর মূল সমন্বয়কের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়। যেখানে গাড়ির রং পরিবর্তন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মূল সমন্বয়ক নিজে পঞ্চম দলের মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। তাঁর কয়েক জন সহযোগী ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে থাকেন। সাধারণত তাঁরা বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে থাকেন। পরবর্তীকালে সেগুলো বিক্রির আগপর্যন্ত ভাড়ায় দেওয়া হয়ে থাকে।