আজ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে। আজ রোববার বিকেল ৩টায় সভাটি শুরু হবে নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে।
এ বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। মূলত বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম নির্ধারণ করতে চায় ইসি।
ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মোট ৩০ জন বুদ্ধিজীবীর তালিকা করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে হয়তো কেউ কেউ আসবেন না। তবে অনেকেই আসবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। কাউকে আবার আমন্ত্রণপত্র পৌঁছানো হলেও তাঁদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।
গত বুধবার অর্থাৎ, ৯ মার্চ নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, শিক্ষাবিদ, বিশিষ্টজন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নারী নেত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবে ইসি। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করার পরিকল্পনা ইসির।
ইসির জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২২ মার্চ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এবং ৩০ মার্চ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বসতে পারে ইসি। অন্য মহলের সঙ্গে কবে নাগাদ বসবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। পরদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা শপথ নিয়ে প্রথম অফিস করেন ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এককভাবে লেভেলড প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারে না। আমাদের কনসার্ন যে এজেন্সিগুলো আছে, সবাই চেষ্টা করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেটাকে আমরা বলি পলিটিক্যাল লিডারশিপ অব দ্য কান্ট্রি। এর মানে আওয়ামী লীগ একা নয়, দেশে বিএনপি, আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টি মিলে একটি পলিটিক্যাল লিডারশিপ থাকে। এ লিডারশিপে কিন্তু একটা সমঝোতার চেষ্টা করতে হবে। কেউ কারও সঙ্গে কথা বলব না, আমরা মাঠেই কথা বলব—তাহলে কিন্তু সমস্যা।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘আমার জীবনের অভিজ্ঞতা বলে, আলোচনার মাধ্যমে দূরত্ব কমে আসে। আমরা যদি মুখ ফিরিয়ে থাকি, তাহলে কিন্তু দূরত্ব বাড়তে থাকে। ফলে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাউকে না কাউকে অহংকার পরিত্যাগ করে মিলেমিশে আলোচনা করতে হবে যে, নির্বাচন করতে গেলে আমাদের ভূমিকা কী হবে, আমরা কতটা সংযত থাকব, আমরা কতটা সহযোগিতামূলক আচরণ করব।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশে পলিটিক্যাল লিডারশিপের যে দায়িত্বটা রয়েছে, তাঁরা যদি একে-অপরের সঙ্গে শেয়ার না করেন, তাহলে নির্বাচন কমিশনের এককভাবে যে উদ্দেশ্য অর্জন, সেখানে সীমাবদ্ধতা দেখা দেবে। আমাদের দায়িত্ব রয়েছে, সে পলিটিক্যাল লিডারশিপের কাছে আবদার করা, অনুনয় করা, বিনয় করা এবং যাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের সঙ্গেও আমরা বসব।’
নির্বাচন কমিশন সবশেষ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ২০১৭ সালে। সে বছর ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে কার্যত ওই সংলাপ শুরু হয়েছিল। এরপর ৪০টি রাজনৈতিক দল, নারী নেতৃত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যমের সঙ্গেও বসেছিল কে এম নূরুল হুদার কমিশন। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনেই আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৩ সালের শুরু থেকেই নির্বাচনি প্রস্তুতি নিতে শুরু করবে কমিশন।