আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হবে : প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সরকার এখন আন্তর্জাতিক বাজারের দামের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণের দিকে এগোচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাজারভিত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যাসের দাম নির্ধারণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। একইভাবে বিদ্যুতের শুল্কও বাজার অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে সৌরবিদ্যুৎ সংক্রান্ত কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির গৃহস্থালি গ্রাহকদের গ্যাসের দাম আবারও ৪৭ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, একজন সিঙ্গেল বার্নার ব্যবহারকারীকে বর্তমান মাসিক বিল ৯৯০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৩৭৯ টাকা এবং ডাবল বার্নার ব্যবহারকারীকে মাসে ১ হাজার ৮০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৫৯১ টাকা দিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “নতুন বাজারভিত্তিক মূল্য ব্যবস্থা শিগগিরই চালু করা হবে, যার অধীনে কখনও কখনও দাম তাদের আন্তর্জাতিক বাজারের দামের ভিত্তিতে বাড়বে এবং আবার কখনও কমবে। এখন গ্যাসের জন্য যে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে চায় সরকার।”
সৌরবিদ্যুৎ খাত সম্পর্কে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বব্যাংক একটি সমীক্ষা চালিয়েছে; যেখানে তারা বেশ কয়েকটি এলাকা চিহ্নিত করেছে, সেখান থেকে প্রায় পাঁচ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে।”
নসরুল হামিদ বলেন, “আমরা বিশ্বব্যাংককে বলেছি, সরকারি ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করতে পারে। তারা সেখানে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে।”
বায়ু অফশোর শক্তিকে কেন্দ্র করে একটি বিকল্প তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সরকারও একটি সমীক্ষা চালাচ্ছে—এই ধরনের অফশোর ও অনশোর বায়ুশক্তির সম্ভাবনা থেকে কত দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।”
নসরুল হামিদ আরও বলেন, “আমাদের দেশের জন্য একটি বড় সুবিধা, আমাদের উপকূলে অগভীর সমুদ্রের একটি বিশাল এলাকা রয়েছে, যেখানে পানির গভীরতা ৫০-৬০ মিটার।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু পরিবেশগত দিক এবং মৎস্যসম্পদও রয়েছে বলে অনেক বিষয়েই নজর দিতে হবে। বাতাস থেকে সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর আগে আমাদের অনেক বিষয় বিবেচনা করতে হবে।”
সরকার এখন সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ দিতে কাজ করছে বলেও জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
‘ইউটিলিটি স্কেল সোলার’- শিরোনামের কর্মশালায় বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিনিধি দলের বলেন, “ভূমি পাওয়াই একটি মূল চ্যালেঞ্জ। বিশ্বব্যাংক জামালপুরে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে আগ্রহী।”
বিশ্বব্যাংক দলের নেতা বলেন, “আমরা প্রকল্পের জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল সংগ্রহ করতে পারি।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান এবং টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মুনিরা সুলতানা।