আন্দোলনের ভিন্ন রূপ হবে, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা : মির্জা আব্বাস
সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, গুলি করছেন, আমরাও ছেড়ে দেব না। আন্দোলনের ভিন্ন রূপ হবে। এরশাদের সময়ও গুলি হয়েছিল। আন্দোলন সব সময় এক রকম চলে না। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ‘নজিরবিহীন বিদ্যুৎ লোডশেডিং, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, গণপরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নিহত নূরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির (জোন-৩) উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, প্রতিবাদী মিটিং, মিছিল করছি বহুদিন ধরে, কিন্তু এই সরকারের টনক নড়ে না। সরকারের গায়ে লাগছে না। আসলে কি জানেন, আমরা না দেখলেও সরকার প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে। দিগ্বিদিক শূন্য হয়ে গেছে। রাস্তা ঘাটে যখন আসি দেখি প্রচুর পুলিশ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলেন। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও ভারত সফরে গিয়েছিলেন। আমাদের নেত্রীকে ভারতে রিসিপ করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে সেইদিন একজন প্রতিমন্ত্রী রিসিপ করলেন এটা লজ্জার। কারণ কি, কারণ হলো ভারত বুঝে গেছে, এই প্রধানমন্ত্রীর দাম আর বাংলাদেশে নেই। দেশের মানুষ তাকে আর পছন্দ করে না।
তিনি আরও বলেন, আজকের মিটিংটা কিসের জন্য? রহিম, নূরে আলমসহ বিএনপির নেতাদের হত্যার প্রতিবাদে এ মিটিং। আওয়ামী লীগ ভয় পেয়ে গুলি করছে। সাপ কখন ছোবল দেয় জানেন? সাফ যখন ভয় পায় তখন ছোবল মারে। আওয়ামী লীগের অবস্থা হচ্ছে সাপের মত। ভয় পেয়ে গুলি করছে।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে মিটিং করার কথা ছিল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। পল্টনে গেলে দেওয়া হলো না। আজকে মিটিং করছি গলিতে। আমরা এখন একটা অবস্থা করবো, ঢাকার প্রতিটি গলিতে মিছিল মিটিং হবে। আপনাদের ঠেকানোর ক্ষমতা থাকবে না। আমরা দেখবো আপনাদের পুলিশ কতগুলো আছে আর আমাদের নেতাকর্মী কত আছে। প্রতিটি গলিতে মিছিল হবে, মিটিং হবে। যদি কেউ গুলি করতে চায়, তাকেও আমরা ছাড় দিয়ে কথা বলবো না। কারণ রহিম, নূরে আলম গণতন্ত্রের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছে। এদেশের স্বাধীনতার জন্য বহু মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছে। আমরাও আত্মাহুতি দিতে প্রস্তুত। আমি আগেও বলেছি। আজকেও বলি, আমাদের সন্তানদের জন্য একটা নিরাপদ ভবিষ্যত গড়ে যেতে চাই। ভবিষ্যত প্রজন্মকে এরকম একটা হায়েনার সরকারের কাছে রেখে যাওয়া যাবে না।
ভারত সফর নিয়ে বিএনপি খুশি হয়নি প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, খুশি হব কেমন করে। দেওয়া ছাড়া কিছুই নিয়ে আসতে পারলেন না। তিস্তার কোনো সমাধান করতে পারলেন না। মোমেন সাহেব সব গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। ভারতের সহায়তা ছাড়া আপনারা ক্ষতমতায় আসতে পারবেন না। বিএনপি এই দেশের মানুষের সহায়তায় ক্ষমতায় আসে। এই দেশের জনগণ খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে ভালোবাসে। সুতরাং দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে কখনও ভোট দিবে না। এ জন্য তারা ইভিএম নিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে যে চুরি হয় এটা সবাই যানে। এটা জনগণকে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।
তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নতুন সরকার ও নির্বাচন কমিশন হবে। সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। এই যে মিছিল শুরু হয়েছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামানো ছাড়া, এ মিছিল শেষ হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রেসক্লাবের সামনে মিটিং করতে দেন না। বলেন, গাড়ি চলাচলে সমস্যা হবে। একদিন ঢাকা শহরের প্রতিটি গলিতে মিছিল হবে, সেদিন দেখব কতটা গাড়ি চলে। রাজপথ কিন্তু আপনাদের ছেড়ে দেব না। রাজপথ আমরা দখলে নেব। ছাত্রদল, যুবদল নেতারা গুলি খাওয়া শিখে গেছে। সুতরাং এই সরকারের পতন ঘটিয়েই আমরা ঘরে ফিরব।
ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের নেতা লিটন মাহমুদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।