আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মো. আহকাম উল্লাহ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) রোববার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তরে সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ মারা যাওয়ার পর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক পদটি শূন্য হয়ে যায়। সেই পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পেলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মো. আহকাম উল্লাহ।
সোমবার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক আহাম্মেদ গিয়াস প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মো. আহকাম উল্লাহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, সাংস্কৃতিক জোটের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মো. আহকাম উল্লাহকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত আহকাম উল্লাহ সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ব্যাপারে মো. আহকাম উল্লাহ বলেন, দেশের চলমান সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে প্রথমত দুটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করব। তাহলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া এবং সংস্কৃতি খাতে বাজেট বাড়ানো।
মো. আহ্কাম উল্লাহ’র পুরো নাম আবুল ফাৎহা মো. আহ্কাম উল্লাহ্ ইমাম খান আমল। জন্ম ১৯৭০ সালের ৩০শে আগস্ট। বাবা মরহুম মো. আলী ইমাম খান, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক এএসপি। মা সুফিয়া ইমাম।
ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল আর নটরডেম কলেজ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক। শিক্ষায় সফলতা তাঁকে আরো পরিণত করে তোলে শিল্প-সংস্কৃতি-রাজনীতি আর সাংগঠনিক চর্চায়।
দীর্ঘদিন সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বরশ্রুতির নেতৃত্ব দেওয়ার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আহ্কাম উল্লাহ্। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (২০০২ থেকে) এর কেন্দ্রীয় উপকমিটি সহ-সম্পাদক ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উ্দযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির আবৃত্তি ওয়ার্কিং কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মো. আহ্কাম উল্লাহ্। এর মধ্যে রয়েছে: চ্যাম্পিয়ন, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সপ্তাহ ১৯৮৯-৯০, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; রানার-আপ, কেন্দ্রীয় সাহিত্য সপ্তাহ ১৯৮৯-৯০, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ম্যান অব দি ইয়ারস্কুনটরডেম কলেজ ১৯৮৭; শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক, আন্তঃকলেজ বিতর্ক ১৯৮৭ ইত্যাদি। দলনেতা, চ্যাম্পিয়ন দল (অর্থনীতি বিভাগ), নাফিয়া গাজী স্মৃতি আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ১৯৯১ ও ১৯৯২। পরপর তিনবার চ্যাম্পিয়ন আন্তঃলিও ক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা ১৯৯০, ৯১, ৯২। জাতীয় বিজ্ঞান সপ্তাহে বিভাগীয় পর্যায়ে সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল, নটরডেম কলেজের প্রতিনিধি হিসেবে ৮৪,৮৫ ও ৮৬ সালে চ্যাম্পিয়ন; ১৯৮৭ সালে নটরডেম কলেজের প্রতিনিধি হিসেবে বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হন। ১০ম জাতীয় বিজ্ঞান সপ্তাহে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় বিতর্ক ও উপস্থিত বক্তৃতায় পরপর তিনবার চ্যাম্পিয়ন। বঙ্গবন্ধু হলে পরপর তিনবার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে প্রথম বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসবে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি সম্মাননা স্মারকে ভূষিত হয়েছেন মো. আহকাম উল্লাহ্। মো. আহ্কাম উল্লাহ্ একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও। শীর্ষ পদে আছেন ৭টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের।
দীর্ঘ আবৃত্তি চর্চার ধারাবাহিকতায় মো. আহ্কাম উল্লাহ্ রাজধানীসহ দেশজুড়ে অসংখ্য মানুষের প্রিয় আবৃত্তিশিল্পী, যার মধ্যে আছেন সব বয়সী মানুষ এমনকি দেশের বিশিষ্টজনেরাও। একাধিক আবৃত্তির অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তাঁর।
উল্লেখ্য, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক, আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ গত ১লা এপ্রিল করোনা পরবর্তী শারীরিক নানা জটিলতায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। দেশের অগ্রগণ্য আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফের স্থলাভিষিক্ত হলেন মো. আহকাম উল্লাহ।