আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি : সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন
সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেছেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জিয়াউর রহমান এদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন। জিয়াউর রহমান প্রমাণ করে গেছেন; এদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন যদি না থাকে, তাহলে সে দেশ ভালোভাবে চলতে পারে না। বিএনপি একটি সাংবিধানিক পার্টি। এটি গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পার্টি।
রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আজ শনিবার জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন আরও বলেন, জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রে ও আইনের শাসনে বিশ্বাস করেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিশ্বাস করতেন, মানুষকে সুখী রাখতে হলে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাব পূরণ করতে হবে। তাই দেশে একবার দুর্ভিক্ষ হয়েছিল এবং সে সময় অনেক লোক মারা গিয়েছিল। সে জন্য তখন উনি ভাবলেন, পানি যদি আমাদের হয়, তাহলে মানুষ খেতে পারবে। সেময় উনি নিজে খাল কাটা শুরু করেছেন এবং উনার সময় দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হয়নি। সে সময় মানুষ সুখী ছিল, কোনোরকমের অত্যাচারিত হয়নি।
এদিকে, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় জনসমাবেশে সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে লাখো জনতার সমাগম ঘটেছে গোলাপবাগ মাঠসহ আশেপাশের এলাকায়।
জনতার ঢেউ গিয়ে আছড়ে পড়েছে রাজধানীর প্রবেশপথ সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মানিকনগর, শাহজাহানপুর, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, গোপীবাগ, টিকাটুলি, মতিঝিলসহ প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে। জনতার স্রোতকে আটকে রাখতে পারেনি কোনো বাধাই।
আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৯ দফা দাবিতে এ বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি।
বিএনপির এ গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ছিল ঘটনাবহুল। শর্ত ও পাল্টা শর্তের পর শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার দুপুরে গোলাপবাগ মাঠে গণসমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অনুমতি পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গতকাল শুক্রবার বিকেলে গোলাপবাগ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
আজ শনিবার সকাল আটটার দিকে গোলাপবাগ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, তিল ধারণের ঠাঁই নেই মাঠে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে আশেপাশের এলাকায়।
সমাবেশে যোগ দিতে ভোর থেকেই মিছিল নিয়ে ঢাকার আশেপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে আসতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সকাল ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ী মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ডেমরা, ধোলাইপাড় ও চিটাগাং রোড থেকে বড় বড় মিছিল আসতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী মোড় বিএনপির নেতাকর্মীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। এখানে সরকারের পদত্যাগ দাবি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা যাত্রাবাড়ী মোড় ছেড়ে মহল্লার অলিগলিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রধান সড়ক ধরে মানিকনগর হয়ে কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে যেসব মিছিল এসেছে সেগুলো আর সামনে এগুতে না পেরে সড়কেই অবস্থান নেয়। নেতাকর্মীদের স্রোত দেখা যায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, মতিঝিল, গোপীবাগ ও টিকাটুলিসহ আশেপাশের এলাকায়।