আমাকে ভালোবাসেন আর না বাসেন আমি কাজ করে যাব : মাশরাফী
আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক এবং নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেছেন, আমাকে ভালোবাসেন আর না বাসেন আমি কাজ করে যাব। আপনারা একবারের জন্যও ভাববেন না, আমি বসে আছি।
গতকাল শুক্রবার (৩ মার্চ) বিকেলে ‘জনতার মুখোমুখি জনতার সেবক’ স্লোগানকে সামনে রেখে তৃতীয় পর্যায়ে লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা অনুষ্ঠানে মাশরাফী এসব কথা বলেন।
মাশরাফী বলেন, ‘আমাকে ভালোবাসেন আর না বাসেন আমি কাজ করে যাব। আপনারা একবারের জন্যও ভাববেন না আমি বসে আছি। আমার এভাবে বারবার এসে জনসভা করা সম্ভব না, তারপরও করছি। আমার কাজ হচ্ছে অফিসে অফিসে দৌড়ে আপনাদের জন্য বরাদ্দ আনা। আপনাদেরও সেটাই চাওয়া উচিত। এখানে এসে আপনাদের জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করলাম, আর আপনারা ভাবলেন এমপি খুব ভালো ছেলে- আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। এতে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। সেই ৫০ বছর ধরে যেভাবে ছিলেন এখনও তাই। ৫ বছর ধরে ডাহা মিথ্যা কথা আর আইওয়াশ করে আমিও তো চলতে পারতাম। কিন্তু আমিতো ওই শর্টকাট পথ বেছে নেইনি। আমি কাজ করতে চেয়েছি আর কাজ করতে গিয়ে অনেক বাধা-বিপত্তি দেখছি। সেগুলোরে আমি আস্তে আস্তে অতিক্রম করছি।’
মাশরাফী আরও বলেন, ‘একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আমি কিন্তু রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম থেকে আসিনি। সারাজীবন ক্রিকেট খেলেছি ব্যাট-বল চিনি। রাজনীতি এমন একটা জায়গা বরাদ্দ আনা কাজ করা, কোথায় কী হচ্ছে এটা আমার জন্য নতুন একটা পরিবেশ। অনেকে চল্লিশ বছর করে ভুল করে আর আমি মাত্র চার বছর। আমি জানি আমি এলাকার জন্য কাজ করতেছি। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করছেন, আপনাদের সহযোগিতা সবসময় আমার প্রয়োজন।’
সাবেক এই অধিনায়ক আরও বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে কিচ্ছু পাবেন না। যেখানে যেই দেখবেন টাকা চাচ্ছে; ও হচ্ছে চোর-বাটপার। ও কিচ্ছু করে দিতে পারবে না। কোনো কাজ টাকার বিনিময়ে হয় না। আর আপনি টাকা দিয়ে যদি আমাকে বলেন তাহলে লাভ নেই। টাকা দেওয়ার আগে যদি আমাকে বলেন আমি যদি বলি দেন তখন সমস্যা আমার। টাকার বিনিময়ে কোনো কাজ করাতে যাবেন না। আমি আপনাদের জন্য কাজ করছি। আমার যতদূর সম্ভব আমি কাজ করে যাব। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন; যেন আপনাদের ভালো রাখতে পারি।’
জনতার মুখোমুখি এই অনুষ্ঠানে ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত থেকে মাশরাফীকে ইউনিয়নের উন্নয়ন সম্পর্কিতসহ দীর্ঘ ৪ বছরের কার্যক্রম, সফলতা-ব্যর্থতা, এলাকায় জনগণের জন্য কতটুকু করতে পেরেছেন বা পারেননি, সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং তিনি তার উত্তর দেন। ইউনিয়নের রাস্তা ঘাট, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার না থাকা, খেলার মাঠ, মসজিদ-মন্দির উন্নয়ন, খাল কাটা, স্থানীয় ভূমি অফিসের নায়েবের হয়রানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে এলাকাবাসী প্রশ্ন করেন।
লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ‘জনতার মুখোমুখি জনতার সেবক’ অনুষ্ঠানে জনতার প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করে মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লোহাগড়ার পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মশিয়ুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।