আরেকটি তাণ্ডব দেখলাম, তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নারী নিয়ে নারায়ণগঞ্জে রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের অবস্থান এবং পরবর্তী সময়ে হামলার ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ‘সোনারগাঁর রিসোর্টে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের সঙ্গে যে নারী ছিলেন, তিনি তাঁর স্ত্রী নন।’
সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে আজ রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাল আরেকটি তাণ্ডব দেখলাম মাননীয় স্পিকার। সোনারগাঁ উপজেলার একটা প্রাইভেট রিসোর্টে হেফাজতের একজন কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হক, তিনি একজন মহিলাকে নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। তিনি তাঁর স্ত্রী নন। কার আহ্বানে, কেন এই রিসোর্টকে ভাঙচুর করল সেটাও আমাদের জানা নেই মাননীয় স্পিকার। সেখানে বিদেশি কয়েকজন ছিল। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে সেই বিদেশিদের রক্ষা করেছে।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আরও বলেন, ‘এই ধরনের তাণ্ডব মাননীয় স্পিকার হঠাৎ করেই... নিশ্চয়ই এর কোনো উদ্দেশ্য আছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে সোনারগাঁর রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হকের অবস্থানের খবর পেয়ে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনও সেখানে উপস্থিত হন। এ ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করেন কয়েকজন ব্যক্তি। ওই লাইভ দেখে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় লোকজন ও মাদ্রাসার শত শত ছাত্র ওই রিসোর্ট গিয়ে মামুনুল হককে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। বের হয়ে এসে মামুনুল হক জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় কিছু লোক মাওলানা মামুনুল হককে রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে অবরুদ্ধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ সময় মামুনুল হক তাঁদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে আসেন। স্ত্রীর নাম আমেনা তৈয়বা। শরিয়ত অনুযায়ী তিনি দুই বছর আগে আমেনাকে বিয়ে করেন। এ বিষয়ে তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে।
ফেসবুক ভিডিওতে দেখা যায়, মামুনুল হক প্রশ্নের জবাবে বলছেন, ‘আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, উনি আমার স্ত্রী। আমি শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ করেছি। আমি সব ধরনের প্রমাণ দেব। আমি কোনো দুর্বলতা নিয়ে এখানে আসি নাই। আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে রিফ্রেশমেন্টের জন্য এখানে বেড়াতে এসেছি। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের লোকবল আমাকে হেনস্তা করেছে।’
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, ‘আজ (শনিবার) দুপুরে স্ত্রীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ে যাই। জাদুঘর ঘুরে দেখে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এখানে (রিসোর্টে) আসি। আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা এখানে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য এসেছিলাম। ... এখানে অনেক উচ্ছৃঙ্খল লোক এসেছে। আপনারা দেখেছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। নিরাপত্তার জন্য তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে স্থানীয় লোকজন এলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।