আ.লীগ প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেছে : আমীর খসরু
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীকে বিজয়ী করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে চট্টগ্রামে মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু মাহমুদ এ অভিযোগ করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘পুলিশ, আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী এই নির্বাচনী প্রজেক্টের আওতায় আজকের মেয়র নির্বাচনে সেই কাজগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে।’
বিএনপির এই নেতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমালোচনা করে বলেন, ‘নির্বাচনই তো হয়নি। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে নির্বাচন করলে বলা যেত নির্বাচন হয়েছে। এজেন্ট বের করে দেওয়ার মূল কাজটি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’
এর আগে আজ সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দুজন। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। নির্বাচনে এজেন্ট বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী।
সকালে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও পরে বেশ কয়েকটি জায়গায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। লালখান বাজারে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকেরা। চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। আহত হয় বেশ কয়েকজন।
খুলসি এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে একজন। আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন।
পাহাড়তলীতে ভোট দিতে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মারা গেছে এক যুবক। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় আরো কয়েকটি এলাকায়।
সকালে বহদ্দারহাটে এখলাসুর রহমান সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডাক্তার শাহাদাত হোসেন ভোট দেন বিএড কলেজ কেন্দ্রে।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন দুই প্রার্থী।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ৭৩৫টি কেন্দ্রের সবগুলোতে ভোট নেওয়া হয় ইভিএমে। স্থগিত আছে দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন সাতজন প্রার্থী। আর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে নির্বাচন হয় ৩৯টি ওয়ার্ডে। ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিম মৃত্যুবরণ করায় ওই পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। তবে ওই ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসেন মুরাদ ইন্তেকাল করলে সেখানে আবদুল মান্নানকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ৩৯ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়েছেন ১৬৮ প্রার্থী। ভোটার সংখ্যা সর্বমোট ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন।