আল জাজিরার প্রতিবেদন সরাতে ফেসবুক রাজি হয়েছে : মন্ত্রী
বাংলাদেশ বিষয়ে আল জাজিরায় প্রচারিত রিপোর্টটি সরিয়ে ফেলতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ ছাড়া ইউটিউব থেকেও প্রতিবেদনটি সরানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেও টেলিফোনে এনটিভিকে নিশ্চিত করেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করলে আল জাজিরার পেজ বন্ধ করে দিতে পারতাম। নীতিগত কারণে আমরা গণমাধ্যমের কোনো পৃষ্ঠা বন্ধ করি না, ওয়েবসাইট বন্ধ করি না। আল জাজিরার কাছ থেকে যখন এটি ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রসারিত হতে শুরু করল, আমরা ফেসবুক ও ইউটিউবকে বলেই আসছিলাম, তোমাদের এটা হবে এবং সেটা সরানোর জন্য তোমাদের আমরা অনুরোধ করছি। আমরা একটা আদালতের রায় পেয়েছি এবং রায়টা আমরা ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি। এবং তাদের অনুরোধ করেছি, তারা আমাদের সাথে যে কথা বলেছিল, সেই কথাটা তারা রক্ষা করে। তারা এখন পর্যন্ত যেসব অপপ্রচার আছে, সেগুলো তারা সরিয়ে নেবে।’
এদিকে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ ঢাকায় বিটিআরসির মিলনায়তনে বিটিআরসি, অ্যামটব এবং মোবাইল অপারেটরদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধেক খরচে বাংলা এসএমএস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মোবাইলে বাংলায় এসএমএস বা খুদে বার্তা খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। গ্রামীণফোন ও টেলিটকের গ্রাহকেরা আজ থেকেই এই সুবিধা পাবেন। রবি ১৫ মার্চ ও বাংলালিংকের গ্রাহকেরা ৩১ মার্চ থেকে এই সুবিধার আওতায় আসবেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমানসহ বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠার পর আমাদের নৈতিক দায়িত্ব সর্বত্র বাংলা চালু করা।
মোবাইলে বাংলা এসএমএসের মূল্য অর্ধেক করায় বিদেশি তিনটি মোবাইল কোম্পানির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা বাণিজ্যের প্রতি না তাকিয়ে বাংলার প্রতি তাকিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু এবং ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি অর্থাৎ দেশে প্রায় ১৭ কোটি মোবাইল সংযোগ রয়েছে। কেবল শিক্ষিত শ্রেণি মোবাইল ব্যবহার করে তেমনটিও নয়।
মন্ত্রী সার্বজনীন বোধগম্য ভাষায় মোবাইল এসএমএসকে একটি কার্যকরী যোগাযোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকেও গ্রাহকদের জন্য পাঠানো এসএমএস বাংলায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের বাংলায় এসএমএস পাঠানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মোস্তাফা জব্বার মাতৃভাষা হিসেবে বাংলাকে পৃথিবীর চতুর্থতম মাতৃভাষা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, পৃথিবীর ৩৫ কোটি মানুষের ভাষা হচ্ছে বাংলা। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে বাংলাভাষাভাষী মানুষ নেই। হলহ্যাড নামের একজন ইংরেজ ব্রিটিশ শাসনামলে ফার্সির বদলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা এবং পরে পরবর্তিতে ১৯১৮ সালে ড. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেননি, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া সর্বত্র বাংলায় দাপ্তরিক যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেটে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা ছিল। কিন্তু আইক্যান ও ইউনিকোডের সঙ্গে সরকারের সুদৃঢ় উদ্যোগের ফলে আমরা তা অতিক্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছি।