আশুগঞ্জে হরতাল চলাকালে হামলা-সংঘর্ষ, আহত ২০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় আজ রোববার হরতাল চলাকালে বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড, হামলা, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর, দফায় দফায় সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
হরতাল সমর্থনে আজ আশুগঞ্জের বাদশাহ বাড়ির মোড়ে আশুগঞ্জ ইমাম ওলামা পরিষদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এ সময় হেফাজতের পিকেটাররা আশুগঞ্জে গোলচত্বর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খাটিহাতা বিশ্ব রোড পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করে। সকাল সাড়ে ১০টায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা আশুগঞ্জ শহরের কাচারী বীথিকায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করে। তাতেও তারা থামেনি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোল প্লাজা ভাঙচুর করে এবং তিনটি টোলবক্স ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ বক্সেও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। আগুনে পুলিশ বক্সের নিচতলা এবং দুতলার মূল্যবান আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজি মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হানিফ মুন্সি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেন ম্যুরাল প্রাঙ্গণে।
বেলা ১১টায় হেফাজতের কর্মীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সব গেট ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ছফি উল্লাহ মিয়া বলেন, হেফাজতের ঘাড়ে ভর করে বিএনপি-জামায়াত সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। হেফাজত যা করছে, তা কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয়। আমি আশুগঞ্জে হেফাজতের নেতা মুফতি মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ও মুফতি মোশাররফ হোসেনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। তাঁদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনলেই আশুগঞ্জে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে।
দুপুর ১টায় হেফাজতের কর্মীরা পুনরায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ বাদশাহ বাড়ির মোড়ে সংগঠিত হয়ে আক্রমণ করতে পারে বলে খবর পান আওয়ামী লীগের নেতারা। মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ও মোহাম্মদ হানিফ মুন্সি নেতাকর্মী নিয়ে আশুগঞ্জ রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিলে হেফাজতের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তানভির আযহারসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
হেফাজতের হরতালের নামে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হানিফ মুন্সি। এজন্য যারা দায়ী তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে হানিফ মুন্সি বলেন, হেফাজতে ইসলাম বিএনপি-জামায়াতের ওপর ভর করে ঘোলাপানিতে ফায়দা লুটের চেষ্টা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।