আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রায় : পর্যবেক্ষণসহ আপিল বিভাগের নিষ্পত্তি
সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।
তবে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আজ সোমবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও এ কে এম ফজলুল হক। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আরশাদুর রউফ এবং ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস শুনানিতে ছিলেন। আর, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশ যেতে অনুমতি সংক্রান্ত হাইকোর্টের পৃথক তিনটি রায় এবং দুটি আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা পাঁচটি লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য আপিল বিভাগ ২৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী আজ রায় ঘোষণা করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে, ১৫ দিন পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে পর্যবেক্ষণসহ বিস্তারিত জানা যাবে বলে উল্লেখ করেন আপিল বিভাগ।
দেশত্যাগে বিরত রাখার বৈধতা নিয়ে নরসিংদীর মো. আতাউর রহমানের করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রায় দেন।
সে রায় অনুযায়ী যতক্ষণ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি প্রণয়ন না হচ্ছে ততক্ষণে অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়ে কাউকে বিদেশ যেতে বিরত রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে।
অন্যদিকে, পাসপোর্ট জব্দ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মো. আহসান হাবিব নামের এক ব্যক্তির করা রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৪ মার্চ রায় দেন হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ।
ওই রায় অনুযায়ী অপরাধের অনুসন্ধান বা তদন্তকালে জরুরি পরিস্থিতিতে কোনো ব্যক্তিকে দেশত্যাগে বিরত রাখা ও পাসপোর্ট জব্দ করা হলে কমিশন বা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পরে অনুমোদনের জন্য সিনিয়র স্পেশাল জজ বা স্পেশাল জজ আদালতে আবেদন করতে হবে। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও পাসপোর্ট জব্দের সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য ১৫ দিনের মধ্যে এই আবেদন করতে হবে। আর দুর্নীতি দমন কমিশন এমন আবেদন করলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা পক্ষের ন্যায্য সুযোগ নিশ্চিতে স্পেশাল জজ ওই আবেদন যত দ্রুত সম্ভব (৬০ দিনের মধ্যে) নিষ্পত্তি করবেন।
এ ছাড়া বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞার বৈধতা নিয়ে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাফসির আউয়ালের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে তিন মাসের জন্য তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেন। হাইকোর্টের এই তিনটি রায় ও দুটি আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা পাচটি লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে রায় দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।