আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে ৩৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ এনে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিবসহ ৩৬ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আদালতের বিচারক শিবলু কুমার দে ঘটনা তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী আল্লামা শফীর শ্যালক মঈন উদ্দিন জানান, মামলায় তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এসব ঘটনা হেফাজতের বর্তমান আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর ইন্ধনে হয়েছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, নাছির উদ্দীন মুনিরী, মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, আজিজুল ইসলাম, ইসলামাবাদী, জাকারিয়া নোমান ফয়েজি, নুরুজ্জামান নোমানী, আবদুল মতিন, মো. শহীদুল্লাহ, মো. রিজুয়ান আরমান, মো. নজরুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান, মো. এনামুল হাসান ফারুকী, মীর সাজেদ, মাওলানা জাফর আহমেদ, মীর জিয়া উদ্দীন, আহমদ, মাহমুদ, আসাদুল্লাহ, জুবাইর মাহমুদ, এইচ এম জুনায়েদ, আনোয়ার শাহা, মো. আহমেদ কামাল, মো. নাছির উদ্দিন, কামরুল ইসলাম কাছেমী, মো. হাসান, ওবাইদুল্লাহ এবাইদ, জুবাইর, মুহাম্মদ, আমিনুল হক, রফিক সোহেল, মবিনুল হকনাঈম, হাফেজ সায়েম উল্লাহ, মাওলানা হাসান জামিলসহ ৩৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আসামিরা আল্লামা আহমদ শফীকে নাজেহালের পাশাপাশি তাঁর কক্ষ ভাঙচুর ও মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁর মুখ থেকে অক্সিজেন কেড়ে নিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর অফিস থেকে বিভিন্ন মূল্যবান কাগজপত্রের পাশাপাশি ৬৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও আনা হয়।
মামলার আইনজীবী আবু হানিফ জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে শফীর হত্যাকারী ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদেরও চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাইনুদ্দীন রুহী। তিনি বলেন, ‘আহমদ শফী হুজুরকে হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করা এবং বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের দায়িত্ব।’
গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসায় এক ছাত্র বিক্ষোভের মুখে মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদ থেকে আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে ও মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক পদ থেকে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
পরের দিনও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপণে মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আন্দোলনরত ছাত্রদের বিক্ষোভ বন্ধ না হওয়ায় পরের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে মহাপরিচালক আহমদ শফী নিজেই তাঁর পদ থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন।
পরবর্তী সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে আহমদ শফীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আহমদ শফীকে ঢাকায় নেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।