ইউক্রেনে আটকাপড়া নাবিক মনসুরুলের বাড়িতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা
উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মাঝে সুনসান নীরবতায় ঢাকা পড়েছে সাতক্ষীরার ‘এখানেই নোঙর’বাড়িটি। শিশু থেকে বড় সবার মুখ থেকে যেন হারিয়ে গেছে সব হাসি। ইউক্রেনে যুদ্ধের ডামাডোলে তাদের নাবিক সন্তানটি কেমন আছে, কোথায় কীভাবে আছে, তাই নিয়ে ভাবনার অন্ত নেই। ক্যাপ্টেন মনসুরুলের মা মর্জিনা খানম শোকে পাথর আর শোকাতুর স্ত্রী আশরুকা সুলতানা হয়ে আছেন নির্বাক-নিথর। বাবা সেলিম খান তবু নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেও যেন চোখের পানি মুছতে পারছেন না।
আজ শুক্রবার সাতক্ষীরা শহরের নারকেলতলার ‘এখানেই নোঙর’ বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিএডিসি কর্মকর্তা নুরুল আমিন খান ওরফে সেলিম খান বললেন, তার ছেলে মনসুরুল আমিন খান (৩৬) ওরফে গিনি ইউক্রেনে সিরামিক নামাতে গিয়ে আটকা পড়েছে যুদ্ধের মাঝে। রাশিয়ার মিসাইল হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’। ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে আটকাপড়া এই জাহাজের ২৯ জনের একজন মিসাইল হামলায় প্রাণ হারালেও জীবিত রয়েছেন অপর ২৮ জন। অতিরিক্ত ক্যাপ্টেন মনসুরুল ওরফে গিনি তাদেরই একজন জানিয়ে সেলিম খান বলেন, তারা এখন বাংকারে অবস্থান করছে। সামান্য শুকনো খাবার খেয়েই কাটছে তাদের দিন।
আজ শুক্রবার ছেলে গিনির সঙ্গে কথা হয়েছে মেসেজও পেয়েছি উল্লেখ করে সেলিম খান আরও বলেন, ‘তারা আরও নিরাপদ স্থানে যাবার চেষ্টা করলেও চারদিকে মাইন বসানো আর অনেক দূরত্বের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। সে কেমন আছে কী খাচ্ছে তা নিয়ে আমাদের ভাবনার শেষ নেই। আমাদের খাওয়া ঘুম হারিয়ে গেছে। আছে শুধুই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা।’
ক্যাপ্টেন মনসুরুল আমিন খানের তিন সন্তানের যমজ পুত্র ফাহিমি ও ফারহান (১০) এবং কনিষ্ঠ ছেলে ফারদিনও (৩) তাকিয়ে আছে বাবার পথ চেয়ে। তাদের মুখেও নেই হাসির রেখা।
বাবা সেলিম খান ও তার পরিবার নাবিক ছেলে গিনিকে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।