ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইউরোপ-আমেরিকাতেও বিদ্যুৎ রেশনিং হচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী
করোনার পর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এখন ইউরোপ-আমেরিকাতেও বিদ্যুৎ রেশনিং হচ্ছে বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে বিএনপি গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল, সেই বিএনপির মিছিলের হারিকেন থেকে পেট্রোলবোমা বের হয় কি-না তা নিয়ে এখন জনগণ শঙ্কিত।
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে ‘স্বনন’ আয়োজিত আবৃত্তি অনুষ্ঠানের শুরুতে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের মূল্য দশগুণ বেড়েছে ও তেলের মূল্য রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ফলে, বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোও বিদ্যুৎ উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী এসময় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে উন্নত দেশগুলোতে নেওয়া ব্যবস্থার খতিয়ান তুলে ধরেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালানি সংকটের কারণে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জনগণকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ সংকটের আশঙ্কায় জাপানে এবং ফ্রান্সেও জনগণের প্রতি একই আহ্বান জানানো হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে কখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়নি। সেখানেও এর সাশ্রয়ের জন্য বলা হয়েছে এবং অনেক শহরে পানি গরম করার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ও সিডনিতে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হচ্ছে। আর ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন বিদ্যুৎ পেত মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ। আর এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে এবং গত অর্থ বছরে সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বা ছয় মিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিয়েছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেসব দেশে এক সেকেন্ডের জন্যও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হতো না, সেসব দেশেও যখন বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও রেশনিং করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও সেই ব্যবস্থা নেওয়া ও জনগণকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমাদের দেশ তো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়। কিন্তু, এ নিয়ে বিএনপির হারিকেন নিয়ে মিছিলের ডাকে জনগণ এখন শঙ্কিত যে, তাদের হারিকেন থেকে পেট্রোলবোমা বের হয় কি-না।’
পরে তথ্যমন্ত্রী একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে কবি শ্যামসুন্দর সিকদারের কবিতার ধ্বনি স্রোতস্বিনী আবৃত্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘যুগে যুগে মানুষের মনন ও সৃষ্টিশীলতাকে সমৃদ্ধ করে আসা কবিতার চর্চাবৃদ্ধি জাতির আত্মিক উন্নয়নের অন্যান্য সোপান।’
বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার আয়োজকদের প্রশংসা করেন এবং এ ধরনের উদ্যোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
ডা. চক্রেশ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন।