ইভিএম না কিনে সিসি ক্যামেরা কেনাই ভালো : এম সাখাওয়াত হোসেন
সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে; ভালো হোক মন্দ হোক। দেড়শ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) না কিনে যতখানি পারেন, বেটার (ভালো) সিসি ক্যামেরা কেনেন। এটা শুধু কেন্দ্র থেকে নয়, ভাগ করে দেন পাঁচজন কমিশনার আছেন। এগুলো রেকর্ডেড থাকবে।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বর্তমান কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বর্তমান কমিশনকে স্বাগত জানান। সাবেক সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করছে ইসি। যেখানে তিনজন সাবেক সিইসি, সাবেক চার কমিশনারসহ সাবেক সচিব ও অতিরিক্ত সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ওনারা (আউয়াল কমিশন) গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে যে অ্যাকশনটা নিয়েছেন, আমি তাদের স্বাগত জানিয়েছি। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। এর পরের ধাপগুলো যাতে আপনারা স্লিপ না করেন। যদি করেন তাহলে জাতির কাছে অন্যরকম একটা মেসেজ (বার্তা) যাবে। যে আপনারা এটুকু দেখানোর জন্য করলেন। বাকিগুলো করলেন না। আইন আপনাদের শক্ত অবস্থানে যেতে বলেছে, প্লিজ ডু ইট।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে ‘অ্যাটমোস্ফিয়ার’ ঠিক নেই, তাহলে ইলেকশন বন্ধ করতেই পারেন। বন্ধ রাখতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি মনে করবেন যে পরিবেশ ঠিক হয়নি, ততক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে পারবেন। কোথাও কোনো বাধা নেই।’
আজকের মতবিনিময় সভায় কোনো বিষয় ছিল না জানিয়ে তিনি বলন, ‘ওনাদের কাছে কোনো এজেন্ডা পাইনি। এজেন্ডাভিত্তিক ছিল না। এজেন্ডা হলে ভালো হতো। যে যার মতো কথা বলেছেন।’
সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ টেনে তিনি বলেন, ‘আপনার কাজ হলো ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন করানো। এ কথা গাইবান্ধা সম্পর্কে বললাম বলে যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে এর আগে কোনো কমিশন এ কাজটি করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৯৪ সালে যদি এটা করা হতো, তাহলে আজকে পলিটিক্যাল ফিল্ডটা অন্যরকম হতে পারতো।’
নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে নির্বাচন করাবেন তাদের ওপরে কনফিডেন্স আনার পরামর্শ দেন এ সাবেক কমিশনার।
ডিসি-এসপিদের সঙ্গে ইসি আনিছুরের বাকবিতণ্ডার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যেটা হয়নি কখনো। এখানে ওনাদের কনফিডেন্স আনতে হবে যে আপনারা প্রটেকশন দিচ্ছেন নির্বাচনে।’
বরিশালে মেয়র আর ইউএনওর ঘটনা টেনে তিনি বলেন, ‘ইলেকশন কমিশনের ইউএনওকে সম্পূর্ণ প্রটেকশন দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’
বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন উপমহাদেশের সব চেয়ে বড় কমিশন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর চাইতে বড় কমিশন আর কোথাও নেই। তিন হাজার স্থায়ী লোক নিয়ে স্থায়ী অফিস নিয়ে আর কোনো লোকজন নেই। এ লোকগুলোকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে।’
জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এনআইডিটা সরকার এখান থেকে কেন নিতে চাচ্ছে ,সেটা পরিষ্কার না। এ এনআইডির পেছনে এতগুলো বছর একটা সিস্টেম ডেভেলপ করেছে ইলেকশন কমিশন। এটা যদি আলাদা হয়ে যায়, তাহলে কোনো এক সময়ে ভোটার লিস্ট নিয়ে কথা উঠবে।
দলীয় সরকারের অধীনে যে ভোটটা হয় সেটা সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করলেই সুষ্ঠু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পলিটিক্যাল প্রসঙ্গ তো আমি আনিনি। ইলেকশন কমিশনের তো কাজ নয়, কে থাকল কে থাকল না।’