ইলিশ ধরতে নদীর পাড়ে উৎসবের আমেজ
ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞার বাকি আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। নদীতে মাছ শিকারের সব ধরনের প্রস্ততি নিয়ে অপেক্ষায় জেলেরা। তর যেন আর সইছে না। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আর অমাবস্যার কারণে পানি বাড়ায় প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পরবে বলে আশাবাদী তাঁরা। এরই মধ্যে ভোলার নদীতে বেশ কয়েকজন জেলে নেমেও পড়েছেন। চারদিকে সেখানে এখন উৎসবের আমেজ।
মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন ইলিশের অভায়শ্রম হিসেবে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে মৎস্য অধিদপ্তর। ৭ অক্টোবর থেকে আজ ২৮ অক্টোবর রাত ১২ টা পর্যন্ত চলবে এ নিষেধাজ্ঞা। যদিও এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাছ ধরার অপরাধে আটক করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার জেলে। জব্দ করা হয়েছে ১২৭ কোটি মিটার জাল। একইসঙ্গে ৪২ হাজার কেজি ইলিশ জব্দসহ চার শতাধিক মামলা হয়েছে। নৌপুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় দিনব্যাপী মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য দেন।
আজ ভোলার তেঁতুলিয়া, নাছির মাঝি, ভোলার খাল ও ইলিশাসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গেলে দেখা যায়, আড়তদারদের পদচারণায় মুখরিত আড়তগুলো। অপেক্ষায় আছেন জেলেরা।
ইলিশার জেলে মো. ইয়াছিন ও ইয়ামিন বলেন, ‘দীর্যদিন মাছ ধরতে পারিনি। খুবই কষ্টে ছিলাম। এখন নদীতে অনেক মাছ, আশা করি কষ্ট দূর হবে।’
তুলাতলীর মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘নদীতে পানি বেশি। সবাই বলছে, প্রচুর মাছ আছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ধারদেনা পরিশোধ করতে পারব।’
মনপুরা রামনেয়াজ মাছ ঘাটের আড়তদার মো. ফিরোজ বলেন, ‘এ বছর অনেক কড়াকড়ি অভিযান চলেছে। এ সময় কোনো নৌকা নদীতে নামতে পারেনি।’
আড়তদাররা জানান, নদীতে প্রচুর ইলিশ আছে। অনেকে মাছ ধরতে জাল আর নৌকা নিয়ে নদীতে নেমে পড়েছে। কয়েকটি মাছ ধরার নৌকায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। যদিও সেই ইলিশগুলো আকারে ছোট ছিল।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ বলেন, ‘এবার সিত্রাংয়ের সময় অমাবস্যার জো ছিল। একইসঙ্গে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নদীতে কোনো জাল ছিল না। যে কারণে সাগর থেকে ইলিশ নদীতে উঠে এসেছে। প্রচুর ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পরবে বরে আশা করছি। একই সঙ্গে নদীতে থাকা নিষিদ্ধজাল তুলে ফেলা হয়েছে। উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে খুঁটিজাল। আশা করছি, জেলেরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।’