ইয়াসে প্লাবিত বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল, ভেসে যাওয়া শিশুর লাশ উদ্ধার
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাট পৌরসভাসহ চার উপজেলা। পানি প্রবেশ করেছে দুই সহস্রাধিক বাড়িঘরে। এছাড়া মোড়লগঞ্জ উপজেলায় চালিতাবুনিয়া গ্রামে পানির তোড়ে ভেসে যায় জিনিয়া নামের চার বছরের এক শিশু। ঘটনার তিন ঘণ্টা পর বাড়ির পাশের ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয় জিনিয়ার মরদেহ।
নিহত জিনিয়া (৪) চালিতাবুনিয়া গ্রামের কামাল গাজীর মেয়ে।
কাউনিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন জানান, আজ দুপুর ১টার দিকে জিনিয়াকে উদ্ধার করে মোড়লগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কোথাও কোথাও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলায় এক কোটি ৫৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও কৃষি বিভাগ। তবে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দিনভর বাগেরহাটের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা মোড়লগঞ্জ ও শরণখোলায় থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। জেলা প্রশাসন থেকে জেলার মোড়লগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা ও রামপাল উপজেলার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া জোয়ারের সময় নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আজ সকাল ৮টা থেকে শরণখোলার বলেশ্বর, মোড়লগঞ্জের পানগুছি, মোংলার পশুর, বাগেরহাটের ভৈরব, দড়াটানাসহ সব নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে এক থেকে দেড় ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির চাপে জেলার দুই সহস্রাধিক চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোড়লগঞ্জের শানকিভাঙ্গা ও বদনীভাঙ্গা গ্রামের বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। ফলে ঝড়ের প্রভাব শুরুর আগেই আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় এই দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৌদ্ধ বলেন, ‘পূর্ণিমা ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভাটিতে এ পানি আবার নেমে যাবে।’