একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবেন, এটা হতে পারে না : আপিল বিভাগ
‘একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবেন, আর আমরা চোখ বন্ধ করে থাকব, এটা হতে পারে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আজ রোববার রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ কমান্ডারের জায়গা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকারের অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানিতে আদালত এ মন্তব্য করেন।
আদালতে সরকারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আওসাফুর রহমান।
শুনানির শুরুতে ১০ বছরেও মামলাটি শুনানির প্রস্তুতি না নেওয়ায় উষ্মা করে বলেন, ‘১০ বছরেও একটা মামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন না, এটা লজ্জার।’
শুনানির একপর্যায়ে আপিল বিভাগ বলেন, ‘যাদের মূল ভিটে-বাড়ি, আগে তাদের কথা ভাবতে হবে। একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবেন, আমরা চোখ বন্ধ রাখব, তাহলে দেশে কোর্ট-কাচারি থাকার দরকার কী? এ বিষয়ে আমরা চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না।’
পরে আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন ধার্য করেন।
রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আওসাফুর রহমান বলেন, ‘রাজধানীর মগবাজারের সাড়ে ১৯ শতাংশ জায়গার প্রকৃত মালিক বীরেন্দ্র কুমার নাথ। ১৯৪০ সালে আম মোক্তারনামা মূলে এই জায়গা সিরাজ কমান্ডারকে দিয়ে তিনি ভারতে চলে যান। সিরাজ কমান্ডার এই জায়গার হোল্ডিং ট্যাক্স, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল পরিশোধ করে তাঁর নামে মিউটেশন করে খারিজ করে নেন। জায়গার খাজনাও পরিশোধ করেন। সেখানে স্ত্রী সন্তানসহ বসবাস করতে থাকেন।’
আওসাফুর রহমান আরও বলেন, ‘২০১০ সালের শেষের দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ তাঁদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। পরে তাঁরা জানতে পারেন, এ জায়গা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে অধিগ্রহণ করে বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতিকে দেওয়া হয়েছে। ওই বছরই জায়গা অধিগ্রহণ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সিরাজ কমান্ডারের সন্তানরা।’
রিটকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘রিটের শুনানি নিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্ট অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে লিভ টু আপিল করে সরকার। সেই লিভ টু আপিল শুনানি চলছে।’