এক দিনেই রসুনের দাম বাড়ল কেজিপ্রতি ৪০ টাকা
বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে এক লাফে ৩৮ টাকা বেড়েছে। কিন্তু, এক লাফে রসুনের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা।
রসুনের দাম হঠাৎ এত বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, এ দেশে ব্যবসায়ীরা যা করেন, তা-ই যেন আইন হয়ে যাচ্ছে। আর, আমরা তা মানতে বাধ্য হচ্ছি।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ঘুরে রসুনের এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে।
বাজারে মূলত দুই ধরনের রসুন দেখা গেছে—দেশি রসুনের দাম ১০০ টাকা কেজিপ্রতি। চায়না রসুনের দাম ১৩০ টাকা কেজিপ্রতি।
গত মঙ্গলবার দেশি রসুনের দাম ছিল ৬০ টাকা কেজি। বুধবার তা হঠাৎ করেই হয়ে যায় ১০০ টাকা। একই দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার চায়না রসুনের দাম ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিপ্রতি। কিন্তু, বুধবারেই তা হয়ে যায় ১৩০ টাকা কেজি।
কারওয়ানবাজারের কয়েকটি রসুনের দোকানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন ক্রেতাকে আসতে দেখা গেল। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ রসুনের দাম জিজ্ঞাসা করে চলে যান। তাঁরা দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর মধ্যেই এক জনকে রসুন কিনতে দেখা গেল। ওই ক্রেতার নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তিন দিন আগে রসুন কিনেছি ৬০ টাকা কেজি দরে। আজ সেই রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কিছু রসুন অন্তত কিনে রাখি। নতুবা আরও দাম বাড়তে পারে। এ দেশে দাম বাড়ার তো কোনো নিয়মকানুন নেই।’
রফিকুল যেখান থেকে রসুন কিনেছেন, ওই বিক্রেতার নাম আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘দাম বাড়ার কারণ আমি জানি না। তবে, দাম ৪০ টাকা বাড়ছে, এটা সত্য। আমরা যেমন কিনি, তেমন বিক্রি করি।’
রসুনের দাম জানতে চাওয়া হয় শফিক নামের এক পাইকারি বিক্রেতার কাছে। তিনি বলেন, ‘আমরা শ্যামবাজার থেকে রসুন কিনি। সেখানে দাম বেড়ে গেছে। ফলে, আমরাও ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে রসুন কিনছি। আমরা দেশি রসুন বিক্রি করছি ৯২ টাকা কেজিপ্রতি। আর, চায়না দুই ধরনের রসুন রয়েছে। একটির দাম নিচ্ছি ১২৪ টাকা, আরেকটির দাম রাখছি ১১৫ টাকা কেজি দরে।’
এদিকে, পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিপ্রতি, যা গত মঙ্গলবার ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিপ্রতি। পাবনায় তৈরি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। দুই ধরনের পেঁয়াজেই ১০ টাকা করে কেজিতে বেড়ে গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো ব্যবসায়ীরা বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৭০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বরবটিও আগের মত ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে, পাকা টমেটোর দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ঈদের আগে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া টম্যাটো এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির এ তালিকায় রয়েছে কাঁচা কলা ও পেঁপে। ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁপে এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর, ৩০ টাকার কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।
অন্যদিকে, পটল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে ও চিচিঙ্গার দাম কিছুটা কমেছে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেঁড়সের দাম কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকা হয়েছে। ঝিঙে ও চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।