এবার হবে সরকার পতনের আন্দোলন : খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আজকে আমাদের গণসমাবেশ ঠেকাতে সরকার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। কিন্তু জনগণ সরকারকে বার্তা দিয়েছে, তারা সরকারকে চায় না। ইনশাআল্লাহ গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হবে। জনগণ গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে প্রস্তুত। আমাদের কর্মসূচি আসবে। আমরা এখন চাল, ডাল, তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করছি। এবার আন্দোলন হবে সরকারের পতনের আন্দোলন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আজ সোমবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন।
শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে ‘শহীদ ডা. মিলন-গণতন্ত্রের মুক্তি এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘ডা. মিলন শহীদ হয়েছেন কেনো? তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। সে সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সারা দেশে আন্দোলন ছিল তুঙ্গে। সে সময় এরশাদের পেটুয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন মিলন। তার শাহাদাতের মধ্য দিয়েই আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। মিলনসহ আরও ছাত্র ও শ্রমিক নেতার জীবন দেওয়ার পর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছিল।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের সময় আমাদের নেত্রী বিদেশে যাননি। তাঁকে অনেক চাপ দেওয়া হয়েছিল। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ওয়ান ইলেভেনের সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন ওয়ান ইলেভেনের সরকার নাকি তাদের আন্দোলনের ফসল। তারপর তারা ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। বিএনপির ছয়শর বেশি লোক গুম। এক হাজারের বেশি মানুষ খুন হয়েছে। খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। এটা জনবিচ্ছিন্ন সরকার। জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই। টাকা লুটে আর পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির দাম বেড়েছে। দারিদ্রতা বেড়েছে। ৪০ ভাগ লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে।’
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার পেছনে অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। আমাদের অনেক সহযোদ্ধা প্রাণ দিয়েছেন। ধীরে ধীরে বিভিন্ন পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়। বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে স্বৈরাচার এরশাদ সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তখনই খালেদা জিয়ার নামের আগে যুক্ত হয় ‘আপসহীন নেত্রী’ উপাধি।’
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মিলনের সহপাঠী অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, ‘ডা. মিলন স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। তিনি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচার এরশাদের পুলিশ।’
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং ডা. মেহেদী হাসান ও ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুলের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. শাহিদুর রহমান, সহসভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. পরিমল চন্দ্র মল্লিক প্রমুখ।