এবার হেফাজতের নায়েবে আমির গ্রেপ্তার
এবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও খেলাফতে মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমদ আবদুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাতে বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।
মাহবুব আলম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের তাণ্ডবে আহমদ আবদুল কাদেদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তিনি ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরের ঘটনার মামলার আসামি। আগামীকাল রোববার তাঁকে আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
ড. আহমদ আবদুল কাদের ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ভোটের দিন তাঁর এজেন্টদের বের করে নৌকার প্রতীকে সিল মারার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেন তিনি।
ড. আহমদ আবদুল কাদের ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। ১৯৮২ সালে ছাত্র শিবিরকে জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হলে তিনি জামায়াতের সঙ্গে আদর্শিক বিরোধে জড়িয়ে পড়েন এবং শিবির থেকে সেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে তিনি ইসলামী যুব শিবিরের প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন। ১৯৮৪ সালে ১৩টি দলের সমন্বয়ে গঠিত মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জীর নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের তিনি অন্যতম উদ্যোক্তা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ১৯৮৭ সালে বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলনের প্রয়াসে বিভিন্ন ইসলামি দল, সংগঠন ও ব্যক্তিত্বের সমন্বয়ে গঠিত ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের (বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ৮ ডিসেম্বর তদানীন্তন খেলাফত আন্দোলন ও ইসলামী যুব শিবির একীভূত হয়ে আব্দুল গফফারকে আমির ও ভাষাসৈনিক মাসউদ খানকে মহাসচিব এবং আজিজুল হককে অভিভাবক পরিষদের সভাপতি করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গঠিত হয়। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ২০০১ সালে গঠিত চার দলীয় জোটের আন্দোলনের লিয়াজো কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। সে সময় তিনি ইসলামী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত তিনি ইসলামী ঐক্যজোট ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সহসভাপতি ছিলেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নীতিগত কারণে দুইভাগ হয়ে যায়। একভাগ পূর্ব নামেই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয় আর আরেকভাগ খেলাফত মজলিস নামে নিবন্ধিত হয়। তখন থেকে তিনি খেলাফত মজলিসের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি সমমনা ইসলামী দলগুলোর মুখপাত্র ও সমন্বয়কারী এবং ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিবের দায়িত্বে রয়েছেন গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে পুলিশের রিমান্ডে থাকা মাওলানা মামুনুল হক।