এলডিপি থেকে শতাধিক নেতাকর্মীর পদত্যাগ
কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। দলটির সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী ও যুগ্ম মহাসচিব তমিজউদদীন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পদত্যাগকারী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী, উপদেষ্টা পুষ্টিবিদ ফরিদ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মো. ইব্রাহিম রওনক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি এএসএম মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. আফজাল হোসেন মোর্শেদ, যুববিষয়ক সম্পাদক শফিউল বারী রাজু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক লস্কর হারুনুর রশিদ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন মণ্ডল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান, গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বাবু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ ফয়সাল ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন পাঠান বিপ্লব, কাজী কামরুল হাসান, জাহাঙ্গীর আল সানি, হারুন অর রশিদ, ইউনুস বেপারি, রেজওয়ানুল ইফতেখারসহ ১০০ জন, গণতান্ত্রিক ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা বদরুদ্দোজা, সদস্য সচিব মাওলানা আবদুল হাই নোমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মাওলানা আনোয়ার হোসাইনসহ ২৩ জন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হকসহ এলডিপির ২১ জন্য সাধারণ সদস্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদত্যাগকারী এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব তমিজউদদীন জানান, জাতীয়তাবাদী ঘরানার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি হচ্ছে এই চেতনার সূতিকাগার। কিন্তু মতের অমিলের কারণে বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি নিয়মিত বিষোদ্গার অলি আহমদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নতুন একটি জোট গঠনের প্রচেষ্টা করছেন, যা স্পষ্টত জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ অঙ্গুলিহেলনের নামান্তর।
তিনি আরও বলেন, যখন দেখি তারই মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ পুলিশের মিথ্যা মামলায় কারাগারে, তখন তিনি (অলি আহমদ) প্রমোদভ্রমণে। একটি দলের সভাপতি হিসেবে এর চেয়ে ‘আত্মঅহমিকা’ আর কী হতে পারে। ফলে অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপির নির্বাহী কমিটি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের কমিটি থেকে আমরা গণপদত্যাগ করেছি। ভবিষ্যতে এ দলটির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। দলটির যে কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না।
অন্য কোনো দলে তারা যোগ দেবেন কিনা জানতে চাইলে তমিজউদদীন সাংবাদিকদের বলেন, আজ বিকেলে আমাদের একটা বৈঠক রয়েছে। সেখানে সব সিদ্ধান্ত হবে।
গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও গণতন্ত্রপন্থি মানুষেরা যখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্যকর গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার সংগ্রামে সক্রিয়, তখনও অলি আহমদ তার নেতৃত্বের পুরো ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এলডিপিকে একটি ‘রহস্যজনক রাজনৈতিক’ দল হিসেবে ব্যবহার করছেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক হয়ে গত ১০ বছর ধরে জোটবিরোধী কার্যক্রম করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও একটি বিশেষ দলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা দেখা গেছে চরমমাত্রায়। যা এলডিপির রাজনৈতিক আদর্শ ও লক্ষ্যকে দলিত-মথিত করে ফেলেছে। রাজনৈতিক অঙ্গণে এলডিপি একটি হাস্যকর প্রতিক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে পদত্যাগকারী নেতারা বলেন, দল পরিচালনার ক্ষেত্রে অলি আহমদ চূড়ান্ত অর্থে ‘কর্তৃত্ববাদী ও আত্মঅহঙ্কারে’ নিমগ্ন একজন মানুষ।
এদিকে এ বিষয়ে অলি আহমদের পক্ষে এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন রাজ্জাক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দুষ্কৃতকারীরা দল ছাড়ায় এলডিপি পবিত্র হয়েছে। এলডিপি দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম ও ড. রেদোয়ান আহমদ এ দলের মূল আকর্ষণ। তাদের নেতৃত্বে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এলডিপি আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী।