এস্কাভেটরে কাটা হচ্ছে পাহাড়, যাচ্ছে ইটখোলায়
বান্দরবানে পরিবেশ আইন না মেনে এস্কাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে বিশাল পাহাড়। সেই পাহাড় কাটা মাটি ছয়-সাতটি ডাম্পট্রাকে করে নেওয়া হচ্ছে ইটখোলায়। এবিএম ইটখোলার ম্যানেজার শহীদ এবং করিম নামে দুজন পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পাহাড় কাটার খবর পেয়ে আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে পাহাড় কাটার এস্কাভেটরটি জব্দ করেছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে পাহাড় কাটার এস্কাভেটরটি জব্দ করেছেন। তবে কোনো লোকজনকে সেখানে পাওয়া না যাওয়ায় স্থানীয় সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা ও ইউপি সদস্য সমুন তঞ্চঙ্গ্যার জিম্মায় এস্কাভেটরটি রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের আমতলী তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ঘোনা এলাকায় দুই সপ্তাহ ধরে এস্কাভেটর দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে ডাম্পার ট্রাকে করে মাটি নেওয়া হয়েছে কয়েকটি ইটখোলায়। প্রতিদিনই পাহাড় কেটে ছয়-সাতটি ডাম্পট্রাকে করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েকশ ট্রাক মাটি ইটখোলায় বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবেশ আইন অমান্য করে এস্কাভেটর দিয়ে রাত-দিন সমানতালে পাহাড় কাটা চলছে। ডাম্পট্রাকে করে শত শত ট্রাক মাটি নেওয়ার কারণে পাহাড়ের নিচে বড় বড় গর্ত ও খাদ তৈরি হয়েছে। আশপাশের ঘরবাড়ি ও গাছপালাগুলো ধূলাবালির আবরণে ঢাকা পড়েছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সুয়ালকে।
অভিযুক্ত করিম বলেন, ‘জমির মালিকের কাছ থেকে কিনেই মাটিগুলো এস্কাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে। ডাম্পট্রাকে করে মাটিগুলো ইটখোলায় নেওয়া হচ্ছে ইট তৈরির জন্য। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই মাটি কাটা হচ্ছে। তারপরও যারা আসেন, তাদের সম্মান করার চেষ্টা করি আমরা।’
স্থানীয় সুয়ালক ইউপি চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা জানান, পাহাড় কাটার দায়ে একটি এস্কাভেটর জব্দ করেছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এস্কাভেটরটি জনপ্রতিনিধিদের জিম্মায় রাখা হয়েছে। পাহাড় কাটার সময় কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে পাহাড় কাটার অপরাধে একটি এস্কাভেটর জব্দ করা হয়েছে। জড়িত কাউকে খুঁজে না পাওয়ায় এস্কাভেটরটি জনপ্রতিনিধির জিম্মায় রাখা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে পাহাড় কাটার অপরাধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।