কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে যাচ্ছে আরও ১৬৫৪ রোহিঙ্গা
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছায় ৪৮৩ পরিবারের আরও ১৬৫৪ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আজ বুধবার সকালে এক হাজার জন ও বিকেলে ৬৪৮ জন রোহিঙ্গা ৪০টি বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে রওনা হন। উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে তাঁদের যাত্রা শুরু হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাঁদের।
সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তায় রোহিঙ্গারা উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসতে থাকেন। ১১ দফায় এবার ১৬৫৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে। এ সময় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ৩৮৩ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে তাঁদের আত্মীয়স্বজনের কাছে বেড়াতে গেছেন বলে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন জানিয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা বলেন, ‘সকালে ১০০৬ জন ও বিকেলে ৬৪৮ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে রওনা করেছে। আরও কিছু রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছেন। পরবর্তীতে তাঁদেরকেও সেখানে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ভাসানচরে পৌঁছার কথা রয়েছে তাদের।
এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে গেল ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ম দফায় স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠায় সরকার। এছাড়া ২০২০ সালের মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের এই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সেনাদের অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শিবিরগুলোতে বসবাস করছেন। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে পালিয়ে এসেছিলেন। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ঘন বসতির চাপ কমাতে দুই বছর আগে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।