করোনার ‘ভয়াবহ’ তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্ক করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনগণের অনীহাকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি আরও বলেছেন, ‘করেনার তৃতীয় ঢেউ আরও ভয়াবহ হতে পারে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণ সম্পর্কে সচেতন না হলে করোনার তৃতীয় ঢেউ অত্যাসন্ন।’
আজ রোববার বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য অনলাইন জুম অ্যাপে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
করোনার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে, দেশের প্রতিটি মানুষকে করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে মন্তব্য করেন জাহিদ মালেক। তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে যখন করোনার মৃত্যু তিন-চার জনে নেমে এসেছিল তখন মানুষ ভেবেছিল করোনা দেশ থেকে চলে গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষ অনীহা দেখাচ্ছিল।
‘কক্সবাজার, সিলেটসহ পর্যটন কেন্দ্রগুগুলোতে ২৫-৩০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ভ্রমণ করেছে। অধিকহারে বিয়ে অনুষ্ঠান, পিকনিকসহ নানারকম সামাজিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এসব কারণেই আমাদের দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে।’
মানুষকে করোনার বিষয়ে আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউ আমরা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামলে নিয়েছিলাম। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে অবহেলার কারণে এখন দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এতে দিনে প্রায় শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সময়মতো সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হয়তো সামনেই কমে যাবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণ সম্পর্কে সচেতন না হলে সামনে আবার করোনার তৃতীয় ঢেউ চলে আসবে এবং তৃতীয় ঢেউ আরও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিতে পারে।’
‘ম্যালেরিয়ায় রোগী কমেছে ৯৩ ভাগ, মৃত্যু ৯৪ ভাগ’
দেশে মাত্র দুটি জেলা বাদে সব জেলা থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ম্যালেরিয়া এখন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দেশে ২০০৮ সালের তুলনায় এখন ৯৩ শতাংশ ম্যালেরিয়া রোগী কমেছে এবং ৯৪ শতাংশ মৃত্যু কমেছে। দেশের মাত্র দুটি জেলাতে এখন ম্যালেরিয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই দেশ থেকে ম্যালেরিয়া পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হবে।’
সিডিসির পরিচালক ডা. নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিবিষয়ক) জুয়েনা আজিজ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সেনাল, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ প্রমুখ।