কালিয়াকৈরে ডাণ্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজায় বিএনপি নেতা
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম হাতকড়া এবং ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজায় শরীক হয়েছেন। মায়ের মৃত্যুতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে তিনি প্যারোলে মুক্তি পান। পরে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা এলাকায় নিজেই মায়ের জানাজা পড়ান।
এর আগে শেষবারের মতো মাকে দেখতে সোমবার বিকেলে আইনজীবীর মাধ্যমে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন তিনি। পরে গতকাল মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান বিএনপি নেতা আলী আজম। রোববার বিকেলে আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
আলী আজমের ভাই আতাউর রহমান জানান, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজায় উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হলে তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়। জানাজা ও দাফনের পুরো সময় আলী আজম হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদসহ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আতাউর রহমান আরও জানান, জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলে তাঁর ভাইকে তিন ঘণ্টার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। জানাজা পড়ার সময় পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছিল তাঁর হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি খুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু পুলিশ তাদের অনুরোধ রাখেনি। মায়ের জানাজা পড়ার সময় আলী আজমের হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টিতে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় এবং জানাজায় উপস্থিত লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিসুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের কাছে শুনতে হবে। আমি ব্যস্ত ছিলাম। জেল কোডে বলা আছে কোর্টে অর্থাৎ ডকে উঠানোর সময় ডাণ্ডাবেরি খুলে দিতে হবে। আর বাকি সময় ডাণ্ডাবেরি পরা থাকতে হবে। আমি অনুমোদন করি। পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া থাকে। সেভাবে পুলিশ নিয়ে যায়। নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকে পুলিশের। নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশের যতটুকু দায়িত্ব নেয়ার বিষয় তা পুলিশ নেবে। পুলিশ আমাদের কাছে আবার ফেরত দেয়। আমি শুধু অর্ডার করি।’
গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘আলী আজমকে নয়জন পুলিশ সদস্যসহ জেল আইন অনুযায়ী তাঁর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় ২ ডিসেম্বর আলী আজমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় আলী আজমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ১৫০ জনকে। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুল মান্নান শেখ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।