কাল থেকে সারা দেশে সিনোফার্মের টিকাদান শুরু
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে চীনের সিনোফার্মের টিকাদান কর্মসূচি। সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সারা দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল (সদর ও ২৫০ শয্যা), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস এবং সৈয়দপুর সদর হাসপাতালে এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে। আজ বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসি ও এএইচ) ডা. শামসুল হক।
ডা. শামসুল হক জানান, ঢাকার আট কেন্দ্র বাদে ৪০টি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দেওয়া হবে। অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী, নার্সিংয়ের শিক্ষার্থী, আইএসটি ম্যাটস এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পুলিশ সদস্য ও অন্যরা এই টিকা পাবেন। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে একটি তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এটি টিকার তথ্যভাণ্ডার যোগ করা হবে এবং পরে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। যাঁরা এর আগে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা পাননি, তাঁরা এখন থেকে এসএমএস পাবেন এবং টিকা নিতে পারবেন। একইসঙ্গে নতুন করেও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
ডা. শামসুল হক জানান, প্রবাসীদের মধ্যে যাঁরা সিনোফার্মের টিকা নিতে চান, তাঁরা যেকোনো কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনশক্তি উন্নয়ন ব্যুরোর মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রবাসীদের তালিকা টিকার তথ্যভাণ্ডারে যোগ করবে। এরপর প্রবাসীরা রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারবেন।
এ ছাড়া ঢাকার সাতটি কেন্দ্রে কাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হবে। কেন্দ্রগুলো হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন্দ্র।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় টিকার সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও সরকারের হাতে নেই।
এ অবস্থায় সরকারকে অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করতে হচ্ছে। টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজ এবং চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে।
সিনোফার্মের কাছ থেকে সরকারি পর্যায়ে দেড় কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কেনার একটি প্রস্তাব সরকার ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে ওই টিকা বাংলাদেশ পাবে বলে সরকার আশা করছে।