কিশোরগঞ্জে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জে ভূমিদস্যুতা, অবৈধ দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী দৌরাত্ম্য থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের একটি সাংবাদিক সংগঠনের কার্যালয়ে মাইজখাপন ইউনিয়নের বাসিন্দারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঘটনার ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য এবং তাহেরগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. ফাইজুল ইসলাম।
এ ছাড়াও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীদের পক্ষে উপস্থিত থেকে সন্ত্রাসী ঘটনার বিবরণ দেন মো. শাহ আলম, মো. আবু জাহেদ এবং মো. গণি মিয়া।
তারা জানান, সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের বেত্রাহাটি বেপারীপাড়া গ্রামের দুই ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বকুল মিয়া (৪৫) ও তার ভাই মো. সায়ু মিয়া (৩৫)। এই দুই ভাইয়ের সন্ত্রাসী ও বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ গ্রামবাসী অতিষ্ট। দীর্ঘদিন ধরে এই দুই ভাই ও তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সন্ত্রাসী বহিনী ভূমিদস্যুতা, অবৈধ দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করে আসছিলেন। প্রতিবাদ করলে শারীরিকভাবে মারধর ও অপদস্থ করা হতো। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে পুলিশ প্রশাসন বরাবরে একাধিকবার আবেদন করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য মো. ফাইজুল ইসলাম জানান, নীলগঞ্জ (তাহেরগঞ্জ) বাজারে অবস্থিত তার পাথর ও বালু সরবরাহের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গত বছরের ২০ জুন বকুল মিয়া সায়ু মিয়া পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তারা ওই দোকান বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করা হয়। এদিকে, প্রতিকার পাওয়ার আগেই গত ১৩ জুন তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় আহত ফাইজুল ইসলাম ১৩ দিন কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ২৩ জুন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন তিনি।
জেলা খাদ্য অফিসের তালিকাভুক্ত চাউল সরবরাহকারী বেত্রাহাটি গ্রামের মো. শাহ আলম জানান, ‘তার ধানের চাতাল ও রাইস মিল সংস্কারের সময় ওই দুই সন্ত্রাসী ভাই চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তারা সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সেইসঙ্গে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তাদের বাধার কারণে বর্তমানে চাতালে ধান শুকানো সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে সরকারি গুদামে চাউল সরবরাহ করতে না পেরে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বেত্রাহাটি গ্রামের গণি মিয়া বলেন, তার বাড়িতে ওই দুই ভাই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বিপুল গাছ-গাছালি কেটে ফেলেছেন। তা ছাড়া এ সময় বাড়ির লোকজনকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় জিডি করা হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা মাইজখাপন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বকুল মিয়া ও মো. সায়ু মিয়ার সন্ত্রাসী ও বেপরোয়া কর্মকাণ্ড ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।
এদিকে, এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মাইজখাপন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বকুল মিয়ার ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।