কুলিয়ারচরে মদপানে দুই আ.লীগনেতাসহ ৪ জনের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মদ্যপানে দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কুলিয়ারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিওতে চিকিৎসাধীন।
আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ভোর রাতে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক-২ জহির রায়হান জজ মিয়া ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক গোবিন্দ দাস মারা যান। এর আগে শনিবার রাতে তাদের সঙ্গে থাকা রিকশাচালক শাহজাহান অসুস্থ হয়ে মারা যান।
মৃতদের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে কুলিয়ারচর উপজেলার কুলিয়ারচর বাজারে একটি স্থানে দাওয়াত খাওয়া শেষে সবাই একসঙ্গে মদপান করেন। পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। এরপর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
মৃত গিয়াস উদ্দিনের বোনজামাই মো. শাহজাহান বলেন, ‘গিয়াস উদ্দিন একজন স্থানীয় জনপ্রিয় আওয়ামী লীগনেতা ছিলেন। গতকাল রাতে বাজারে একটি দাওয়াত খাওয়া শেষে ৬-৭ জন বন্ধু মিলে মদপান করেন। এরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাকে হাসপাতালে নিই। পরে তিনি মারা যান। আমাদের ধারণা, তাঁকে মদের সঙ্গে বিষ জাতীয় কিছু মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছে।’
এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানান তিনি ।
জহির রায়হান জজ মিয়ার চাচাতো ভাই সুমন বলেন, ‘কুলিয়ারচর বাজারে একটি দোকানে মিটিং শেষে আমার ভাইয়ের সব বন্ধুরা মদ্যপান করেন। ভোরে আমার ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান।’
সুমন তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে বিষ জাতীয় কিছু মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছে বলে আশঙ্কার কথা জানান।
কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মিলন রায় বলেন, ‘ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে গিয়াস উদ্দিন নামের একজন আওয়ামী লীগ নেতা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসেন। তখন আমরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিই। তখন তার চোখ দেখে আমার সন্দেহ হলে তার সঙ্গে থাকা লোকদের জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে তারা মদপানের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে, পরবর্তীতে তাঁর স্বজনরা মদপানের বিষয়টি স্বীকার করেন এবং আমাদের ধারণা চারটি মৃত্যুই একই কারণে ঘটেছে।’
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘কুলিয়াচরে তিনজন ব্যক্তি, যার মধ্য দুজন ভাগলপুর হাসপাতালে আরেকজন ঢাকা নেওয়ার পথে মারা গেছেন বলে শুনেছি। তবে, এ বিষয়ে আমরা কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। আমরা স্বউদ্যোগেই এই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। তবে, কী কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তা চিকিৎসকরা বলতে পারবেন। এই ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’