কুষ্টিয়ায় অপরিকল্পিত ড্রেজিং, বালুর নিচে চাপা পড়েছে অর্ধশত ঘরবাড়ি
কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীখনন প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের বালুতে চাপা পড়েছে অর্ধশত ঘরবাড়ি। ফলে বাড়িঘর থেকে আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের বহলা গোবিন্দপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গড়াই নদী খনন প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের বালু অপরিকল্পিতভাবে ফেলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন, অসতর্কতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বহলা গোবিন্দপুর গ্রামে জিকে ক্যানেলের পাশে প্রায় ৬০ বছর ধরে বসবাস করছে শতাধিক পরিবার। কয়েক দিন আগেও যে বাড়িগুলোতে মানুষের বসবাস ছিল, এখন সেখানে জন-মানবের চিহ্ন নেই। কথা ছিল, গড়াই নদী খনন প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের বালু পাইপলাইনের মাধ্যমে ওই এলাকার জিকে খালে ফেলা হবে। তবে সেই বালু খাল ভরাটের পাশাপাশি আশপাশের বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে। এলাকার অন্তত ৪৬টি কাঁচা ও আধাপাকা বাড়ির মধ্যে কোনোটির জানালা পর্যন্ত আবার কোনোটির চালা পর্যন্ত বালুর নিচে চাপা পড়ে গেছে।
এ ছাড়া বালুর নিচে চাপা পড়েছে প্রায় অর্ধশত টিউবওয়েল। ফলে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটও সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, বালুতে চাপা পড়েছে বেশ কয়েকটি কবরস্থান। ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগ মানুষ রয়েছে খোলা আকাশের নিচে।
ক্ষতিগ্রস্ত আইনাল হোসেন জানান, বহলা গোবিন্দপুর গ্রামে ৬০ বছর ধরে বসবাস করছে তাঁর পরিবার। কিন্তু কোনো নোটিশ ছাড়াই পাউবোর সিদ্ধান্তে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে তাদের। অবিলম্বে তাদের বাড়িঘর থেকে বালু অপসারণসহ পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এদিকে পুনর্বাসনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুষ্টিয়া পাউবোর ড্রেজার পরিদপ্তর বিভাগের সুপারভাইজার মো. শরিফুল ইসলাম মাসুদ জানান, কাজ করতে গেলে কিছু সমস্যা হতেই পারে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো থেকে বালু অপসারণের পাশাপাশি কীভাবে তাদের পুনর্বাসন করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।