কুষ্টিয়ায় ট্রিপল হত্যা : ৩ জনের আমৃত্যু, ৮ জনের যাবজ্জীবন
প্রায় ১৩ বছর আগের কুষ্টিয়ার আলোচিত ট্রিপল হত্যা মামলায় তিন আসামির আমৃত্যু এবং আট আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলা থেকে ১১ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন চরমপন্থি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য।
মামলার আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পুতলা ডাঙ্গা গ্রামের ফারুক সরদার, সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের কালু ওরফে কফিল উদ্দিন এবং শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার রোহান।
যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের ফারুক মণ্ডল, ভায়না গ্রামের লিয়াকত আলী, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার করিমপুর গ্রামের লিয়াকত শেখ, মনোয়ার শেখ, আকাম উদ্দিন, জমির উদ্দিন, ইবি থানার খোর্দ্দবাখইল গ্রামের নুরাল ওরফে নুরুল এবং সদর উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামের খাকচার মণ্ডল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৯ আগস্ট গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীপুরের আকবর আলীর ছেলে কাইয়ুম সাখাওয়াতী, আয়ুব আলী ও সামসুজ্জামান জোহার মাথা কেটে কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দামবাজার মোড়ের গণপূর্ত অফিসের সামনের গেটে ঝুলিয়ে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশ এসে ওই তিনজনের কাটা মাথা উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার সোনাইডাঙ্গা গ্রামে মাঠের মধ্যে থেকে ওই তিনজনের মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের বাড়ি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকায়।
ওই ঘটনায় নিহত কাইয়ুমের ভাই আব্দুল হাই বাদী হয়ে ১০ আগস্ট কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২২ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
কুষ্টিয়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, এটি শুধু কুষ্টিয়া জেলা নয়, দেশব্যাপী একটি আলোচিত হত্যাকাণ্ড ছিল। টেন্ডারবাজি ও টেন্ডারের দখল নেওয়ার জন্যই মূলত চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। এই মামলায় তিনজনকে আমৃত্যু এবং আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কয়েকজন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন বলেও তিনি জানান।